Learn more about the world’s longest river: অ্যামাজন, মিসিসিপি-মিসৌরি বা গঙ্গা-যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নয়, পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীটির নাম হল নীল নদ। বহু বছর আগে এই নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল এক উন্নত নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। যা মিশরীয় সভ্যতা নামে পরিচিত ছিল। এই সভ্যতার বাসিন্দারা সারা বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছে পিরামিড সৃষ্টি করে। মিশরের এই নীল নদ আজও ১১ টি দেশের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে এবং ছিনিয়ে নিয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীর তকমাটি (Longest River in World)। কোথা থেকে উৎস এই নদীর? ভিক্টোরিয়া হ্রদ থেকে উৎপত্তি হয়ে উত্তর পূর্ব আফ্রিকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এই নদী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ভূমধ্যসাগরে গিয়ে পড়েছে নীল নদ।
বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন যে, পৃথিবীর এই লম্বা নদীটির (Longest River in World) দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। আফ্রিকার অর্থনীতি অনেকটাই জড়িয়ে আছে এই নীল নদের সাথে। তাই একে উত্তর আফ্রিকার অর্থনীতির লাইফ লাইন বলা চলে। বিভিন্ন দেশের উপর দিয়ে এই নদীটি বয়ে গেছে সেগুলি হল, তানজানিয়া, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, উগান্ডা, দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়া ও সুদান।
বিশ্বের এই দীর্ঘতম নদীর (Longest River in World) রয়েছে মোট তিনটি উপনদী। তিনটি উপনদী বয়ে চলেছে উগান্ডা, তানজানিয়া ও কেনিয়ার উপর দিয়ে। উত্তর আফ্রিকার অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করছে নীল নদের ওপর। কৃষিভিত্তিক এই অঞ্চলগুলোর অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে নীল নদের সেচের জলের ওপর। এছাড়া ইতিহাস এবং ভূগোলের পাতায় সবাই পড়েছে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা হলো নীলনদের দান। ঐতিহাসিক গবেষকরা দাবি করেছেন যে, এখানকার নগরকেন্দ্রিক সভ্যতাটি সিন্ধু সভ্যতা এবং মেসোপটেমিয়ার সমসাময়িক।
সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল এই নীল নদের অববাহিকাতেই প্যাপিরাস নামের একটি বিশেষ প্রজাতির গাছ জন্মায়। প্রাচীন মিশরীয়রা এই প্যাপিরাস গাছের ছাল ব্যবহার করতেন। এই গাছের ছালেই লেখা হয়েছিল হায়ারোগ্রিফ লিপি। এমনকি কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হতো এই গাছের ছাল। বিগত কয়েক বছর আগে মিশরের প্রশাসন নীল নদের উপর আসওয়ান হাই নামের একটি বাঁধ তৈরি করে। সেচ ছাড়াও জলবিদ্যুৎ তৈরির কাজে ব্যবহার হচ্ছে ওই বাঁধ।
কিন্তু চিন্তার বিষয় হল ড্যাম তৈরির জন্য মিশরের বেশ কিছু জায়গায় পরিবেশগত ক্ষতি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নদীটির বদ্বীপ এলাকায় ক্ষয় শুরু হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশবিদরা সতর্কবার্তা দিয়েছে যে, গত কয়েক বছরে পৃথিবীর এই দীর্ঘতম নদীর (Longest River in World) দূষণ মাত্রাতিরিক্ত বাড়ছে। বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ, আবর্জনা ওই নদীতে ফেলা হচ্ছে। মিশরের প্রশাসন এই দূষণ বন্ধ করতে নানা রকমের ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে গত বছরের মাঝামাঝি উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রসংঘ।