নিজস্ব প্রতিবেদন : চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) প্রথম থেকেই দেশের বাসিন্দা থেকে বিশ্ববাসীদের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগারের (ISRO) এই চন্দ্রাভিযান বিশ্বে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে চলেছে। বিশ্বের প্রথম কোন চন্দ্রযান পাড়ি দিতে চলেছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। গত ১৪ জুলাই সফলভাবে উৎক্ষেপণের পর রবিবার মধ্যরাতেই সেমিফাইনাল জয় করলো চন্দ্রযান-৩। এবার আর কতকগুলি স্টেপ ঠিকঠাক ভাবে পার করতে পারলেই ফাইনাল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগারের হাতে।
চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম এই মুহূর্তে চাঁদের অনেক কাছে পৌঁছে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে ইসরোর বিজ্ঞানীদের থেকে। চাঁদের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা ল্যান্ডার বিক্রম এখন সুস্থ রয়েছে এবং গতি কমিয়ে পরিকল্পনা মাফিক চন্দ্রপৃষ্ঠের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রবিবার রাত দুটোর সময় বিক্রম চাঁদের ধরা ছোঁয়ার মধ্যে চলে আসে। সমস্ত পরিকল্পনা মাফিক কাজ হলে আগামী ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ছটা নাগাদ চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে ল্যান্ডার বিক্রম। পৃথিবীর মাটি থেকে চাঁদে পৌঁছাতে ভারতের এই চন্দ্রযানের সময় লাগছে প্রায় ৪০ দিন।
এই অভিযানে গত শুক্রবার প্রোপালশন মডিউল থেকে সফলভাবে বিচ্ছিন্ন হয় ল্যান্ডার বিক্রম। এরপর ধাপে ধাপে ডিবুস্টিং করা হয়। চাঁদের কক্ষপথে সঠিকভাবে নিজেকে স্থাপন করার পর ল্যান্ডার বিক্রমের দ্বিতীয় ডিবুস্টিং হয় রবিবার রাতে। দ্বিতীয়বারের এই ডিবুস্টিং হল চূড়ান্ত ডিবুস্টিং এবং এরপরই ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের মাটিতে সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে ল্যান্ডার বিক্রম অবস্থান করছে ২৫ কিমি x ১৩৪ কিমি উচ্চতায়। এই উচ্চতায় থেকে এখন ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে। চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার পাশাপাশি ধাপে ধাপে নিজের গতি কমাতে শুরু করেছে। পরবর্তীতে একেবারে পাখির পালকের মতো ২৩ আগস্ট চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে বিক্রম।
চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার ক্ষেত্রে যখন চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ল্যান্ডার বিক্রম ৩০ কিলোমিটার উঁচুতে থাকবে তখনই সে পাখির পালকের মত অবতরণের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নেবে। এক্ষেত্রে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের মাটি ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খুলে যাবে দরজা। আর সেই দরজা খুলতেই বেরিয়ে আসবে প্রজ্ঞান। প্রজ্ঞান বিক্রম থেকে বেরিয়ে আসার পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়াবে এবং তথ্য সংগ্রহ করবে। চন্দ্রযান-৩ এর বিক্রম এবং রোভার ৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশে অবতরণ করার লক্ষ্য রয়েছে। এই এলাকাটি দক্ষিণ মেরু থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।