নিজস্ব প্রতিবেদন : মহাকাশ গবেষণায় ভারতের নাম বিশ্বের দরবারে স্বর্ণাক্ষরে লিখেছে ইসরোর (ISRO) চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। এই মিশন সফল হওয়ার ফলে ভারত কেবলমাত্র বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেছে এমন নয়, পাশাপাশি বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার সফলতা প্রদর্শন করেছে। ভারতের এমন সাফল্যে নাসা (NASA) থেকে শুরু করে বিশ্বের অধিকাংশ মহাকাশ গবেষণায় নিযুক্ত গবেষণাগারগুলি প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু ভারতের এই সাফল্য সহ্য করতে পারছে না চিন (China)।
চীন প্রতিবেশী দেশ হলেও বরাবর ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো নয়। কিন্তু যেখানে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের সফলতা নিয়ে বিশ্বের প্রতিটি কোণার মানুষ ভারতের প্রশংসায় তখন তারা যে ‘অন্য খেলা’ শুরু করে দেবে তা হয়তো কেউ ভেবে উঠতে পারেননি। তাদের এই অন্য খেলায় রীতিমতো নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। যেখানে ভারতের এমন সাফল্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ধন্য ধন্য করছে, সেই জায়গায় শি জিনপিংয়ের দেশ হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরছে। আর এই হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরা থেকেই শুরু করেছে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য।
গত ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ভারতের তৃতীয় চন্দ্রযান। প্রথম দু’বারের চেষ্টায় সম্পূর্ণ সফলতা না এলেও এবার কিন্তু ভারত সম্পূর্ণ সফল হয় তাদের মিশনে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) সফলভাবে সফ্ট ল্যান্ডিং করার পর সেখানে রোভার প্রজ্ঞানকে (Rover Pragyan) সঙ্গে নিয়ে নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহ করে। এই সকল তথ্য কেবল ভারতের কাজে লাগবে তা নয়, এই নতুন নতুন তথ্য বিশ্বের যেকোনো মহাকাশ গবেষণাগারেরই কাজে লাগতে পারে। কিন্তু চীনের এসব সহ্য হচ্ছে না!
ভারতের উন্নতি হজম করতে না পেরে চীনের মুন মিশনের সংস্থাপক দাবি করেছেন, ‘চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেনি। ভারতের দাবি সম্পূর্ণ সঠিক নয়।’ চীনের বিজ্ঞানী জিয়ুয়ান দাবি করেছেন, “চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারত প্রথম চন্দ্রযান অবতরণ করিয়েছে এই কথা ভুল। এক্ষেত্রে স্পষ্ট নয়, দক্ষিণ মেরু না দক্ষিণ গোলার্ধ।” এমন নানান ধরনের মন্তব্য করে এখন ভারতের সফলতাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য নতুন খেলা শুরু করে দিয়েছে চীন।
আবার এসবের থেকেও একটু ঊর্ধ্বে উঠে চাইনিজ অ্যাকাডেমিক অফ সাইন্সের এক সদস্যের বক্তব্য, ভারতের চন্দ্রযান-৩ না নেমেছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে, না নেমেছে চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে। এর পাশাপাশি তার দাবি, ভারতের চন্দ্রযান ৩ আর্কটিকমেরুর কাছেও নামেনি। অন্যদিকে চিনের প্রথম মুন মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী জিয়ুয়ান দাবি করেছেন, ‘ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ অক্ষাংশের ৬৯ ডিগ্রিতে অবতরণ করে। কিন্তু, চাঁদের দক্ষিণ মেরু ৮৮.৫ এবং ৯০ ডিগ্রি অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থান করে।’
চন্দ্রযান ৩ ঠিক কোথায় অবতরণ করেছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে জোর তর্ক বিতর্ক। চীনের তরফ থেকে এমন আজব দাবি করা হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, ৮০ থেকে ৯০ ডিগ্রী দক্ষিণ অংশটিকে চাঁদের দক্ষিণ ধ্রুব কেন্দ্র বলা হয়। দক্ষিণ ধ্রুব কেন্দ্র থেকে বাইরে হলেও চন্দ্রযান ৩ অন্যান্য মুন মিশনের তুলনায় চাঁদের অনেক অজানা অচেনা জায়গায় অবতরণ করেছে। এমনকি নাসার বিজ্ঞানী নেলসেন এই নিয়ে ভারতের সফলতাকে ধন্যবাদ-ও জানিয়েছেন।