ভারতের জনপ্রিয় এক নদী, যার নাম সবাই শুনেছেন, কিন্তু বয়ে যেতে দেখেননি

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতবর্ষকে বিচিত্র এক দেশ বলা হয়ে থাকে। বিশ্বজুড়ে যে সকল বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় ঠিক সেই বৈচিত্রই রয়েছে ভারতের (Bharat) মধ্যে। যে কারণে ভারতকে শুধু দেশ না বলে বলা হয়ে থাকে উপমহাদেশ। এই উপমহাদেশ হলো নদীমাতৃক এবং এখানে প্রায় ২০০টি নদী (River) রয়েছে। এই সকল নদীগুলির মধ্যে অন্যতম হলো গঙ্গা, যমুনা, গোদাবরী, সিন্ধু, গোমতী, নর্মদা কৃষ্ণা, কাবেরী ইত্যাদি। তবে জানলে অবাক হবেন, এসবের মধ্যে আবার এমন একটি নদী রয়েছে যার নাম সবাই শুনে থাকলেও তাকে কখনো বয়ে যেতে দেখেননি।

Advertisements

যে নদীটির কথা বলা হচ্ছে সেই নদীকে আমরা কথায় কথায় উচ্চারণ করে থাকি। এই নদী অন্যতম পবিত্র একটি নদী। বইয়ের পাতা থেকে শুরু করে ঋগ্বেদ সব জায়গাতেই এই নদীর উল্লেখ রয়েছে। প্রাচীন কাল থেকেই এই নদী নামের ক্ষেত্রে আজও সমান ভাবে জনপ্রিয়। কিন্তু কেউ এই নদীকে বয়ে যেতে এখন আর দেখতে পান না। এমনকি বাস্তব জীবনে এই নদী চোখে দেখার সুযোগই হয়ে ওঠেনি। কারণ এই নদী শুকিয়ে গিয়েছে।

Advertisements

যে নদীটির কথা বলা হচ্ছে সেই নদীটি হল পৌরাণিক নদী সরস্বতী (Saraswati River)। বৈদিক যুগে এই নদীটিকে সবচেয়ে পবিত্র নদী হিসেবে ধরা হত। এই নদীর জল পান করে ঋষিরা বেদ রচনা করেছিলেন এবং বৈদিক জ্ঞানের প্রসার ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই নদীকে কেউ বয়ে যেতে দেখেননি। অবশ্য এই নদীকে বয়ে যেতে না দেখার পিছনে রয়েছে একটি কারণ। সেই কারণটি এই নদীর চোখে দেখা না মেলার সবচেয়ে বড় কারণ।

Advertisements

কথিত আছে, সরস্বতী নদী হিমাচলের সিরমাউড় এলাকার পাহাড়ি অংশ থেকে উৎপন্ন হয়েছিল এবং তারপর সেটি আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, কাইথাল এবং পাটিয়ালার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সিরসার দৃষ্টিবতী নদীতে মিলিত হয়েছিল। হাজার বছর আগে পৌরাণিক যুগে এই নদী নিজের ছন্দে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বয়ে যেত। কিন্তু অভিশাপের কারণে নাকি এই নদী শুকিয়ে যায়। যে কারণে এই নদীর এখন নাম থাকলেও অস্তিত্ব নেই।

রামায়ণ, মহাভারতেও সরস্বতী নদীর উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে। এর পাশাপাশি প্রয়াগকে গঙ্গা-যমুনা এবং সরস্বতী নদীর মিলনস্থল বলা হয়ে থাকে। এখানে সরস্বতী নদী ধরিত্রীর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পুরাণ মতে সরস্বতী অন্তঃসলিলা এবং শুধুমাত্র প্রয়াগের সঙ্গমেই দৃশ্যমান। এছাড়াও ইসরোর (ISRO) গবেষণা থেকে জানা যায়, এখনো এই নদীর অস্তিত্ব রয়েছে। তবে তা ভূগর্ভের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত এবং সেটি আরব সাগরে গিয়ে মিশেছে। এছাড়াও বৈজ্ঞানিক এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, বহু বছর আগে ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে মাটির নিচের পাহাড় উপরে উঠে যায় এবং এই নদীর জল পিছন দিকে চলে যায়। তারপর সেটি যমুনার সঙ্গে মিশে একসঙ্গে প্রবাহিত হয়।

Advertisements