নিজস্ব প্রতিবেদন : উৎসবের মরসুমের লম্বা ছুটির পর আবার আসছে শীতের মরশুম। উৎসবের মরশুমে যেমন পর্যটকদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা ঘুরতে দেখা যায় ঠিক সেই রকমই শীতেও পর্যটকরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার জন্য। ঘোরার ক্ষেত্রে আবার সবার আগে যাদের নাম আসে তারা হলেন বাঙালি। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, অধিকাংশ বাঙ্গালীদেরই ঘুরতে যাওয়া মানেই দিঘা, পুরি অথবা দার্জিলিং। তবে জানেন কি, এসবের বাইরেও ভারতের ঘুরতে যাওয়ার মতো এমন একটি জায়গা (Offbeat Tourist Place)রয়েছে যাকে ‘ভারতের অ্যামাজন’ বলা হয়।
অনেক পর্যটক রয়েছেন যারা গভীর অরণ্য এবং তার মাঝে থাকা নদী পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে আবার বাঙ্গালীদের এই ধরনের জায়গার নাম বলতে বললেই তারা সটান করে সুন্দরবনের কথা বলে দেন। কিন্তু জানেন কি, সুন্দরবন ছাড়াও পড়শী রাজ্য ওড়িশায় রয়েছে এমন একটি জায়গা যেটি ঘন জঙ্গলে ঘেরা, সেখানে বাঘের দেখা না মিললেও রয়েছে অজস্র কুমির, হরিণ, লাল কাঁকড়া, কচ্ছপ আর পাখি। এই জায়গাটি সুন্দরবনের থেকে কোন অংশে কম নয়।
আমরা অফবিট যে জায়গাটির কথা বলছি সেটি হল ওড়িশার ভিতরকণিকা (Bhitarkanika)। এখানে যেভাবে জঙ্গল, নদী এবং পশুপাখিদের সমাহার রয়েছে তা দেখে অনেকেই এই জায়গাকে ভারতের অ্যামাজন বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। এই জায়গাটি অবস্থিত পারাদ্বীপ এবং চাঁদপুরের মাঝখানে। সুন্দরবনের মতোই এখানে রয়েছে ম্যানগ্রোভের সমাহার। এই জায়গা তৈরি হয়েছে ব-দ্বীপের মতো একটি এলাকায় এবং যাকে ঘিরে রয়েছে ব্রাহ্মণী ও বৈতরণী নদী।
ব্রাহ্মণী এবং বৈতরণী নদীর পাশাপাশি অন্যদিকে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। এই তিন জলাধারের মাঝে ৬৫০ বর্গমিটার জায়গা জুড়ে রয়েছে ভিতরকণিকার জঙ্গল। ২০০২ সালে এই জায়গাটি রামসার সাইটে স্বীকৃতি পায়। এখানে নৌকা বিহারের সময় প্রচুর কুমির দেখতে পাওয়া যায়, আবার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা হরিণদের জল খেতে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন রংবেরঙের পাখির পাশাপাশি দেখা যায় লাল কাঁকড়া। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এই জায়গায় ঘুরতে গেলে দেখা মিলবে অলিভ রিডলে কচ্ছপের।
হাতে তিন দিনের ছুটি থাকলেই এই জায়গা ঘুরে আসা যেতে পারে। এখানে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের নামতে হবে ভদ্রক রেল স্টেশনে। সেখান থেকে চাঁদবালি হয়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে ভিতরকণিকায়। এখানে থাকা এবং খাওয়ার জন্য জঙ্গলের ভিতরেই রয়েছে বেশ কিছু রিসোর্ট।