নিজস্ব প্রতিবেদন : রকেটের গতিতে যে সকল নেতা মন্ত্রীদের উত্থান হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একজন হলেন জাফিকুল ইসলাম (Jafikul Islam)। চাকরি না পেয়ে একসময় তিনি খুলেছিলেন একটি টেলিফোন বুথ। ডোমকলের ভাতশালা এলাকায় সেই টেলিফোন বুথ করেই সংসার চালানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। তবে তাতেও তার সংসার ঠিকভাবে না চলার কারণে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করেছিলেন মুড়ির মিল। এরপরই ধাপে ধাপে রাজনীতিতে পা রেখে রকেটের মতো উত্থান থেকে হয়ে ওঠেন ডোমকলের বিধায়ক।
তবে ডোমকলের এই বিধায়ক জাফিকুল টেলিফোনের বুথ থেকে শুরু করে মুড়ি মিলের ব্যবসা শুরু করলেও সেই জায়গায় তিনি আটকে থাকেন নি। মাঝে এক সময় তিনি কিছুদিনের জন্য ধর্মীয় প্রচারে মনোনিবেশ করেছিলেন। এরপর ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় বাড়ির কাছে তৈরি করেছিলেন একটি বিএড কলেজ। শিক্ষা জগতে পা রাখার পর তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক তৈরি হয় বিএড, ডিএড কলেজ। এই মুহূর্তে তার সাতটি কলেজে মালিকানাধীন রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে ফার্মাসিস্ট এবং পলিটেকনিক কলেজেও। রয়েছে পেট্রোল পাম্প। এসব মিলিয়ে কানাঘুষো খবর তিনি কমকরে ১০০ কোটি টাকার মালিক।
সম্প্রীতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ডোমকলের এই বিধায়কের নাম জড়িয়ে যাওয়ার পর তার বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়। সিবিআই তার বাড়িতে হানা দেওয়ার পর স্থানীয় থেকে শুরু করে রাজ্যের মানুষের মধ্যে তার সম্পত্তি নিয়ে কৌতূহল বাড়তে শুরু করেছে। এলাকায় তিনি প্রায় ১০০ কোটি টাকার মালিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও খাতায়-কলমে ঠিক কত টাকা রয়েছে তার চলুন দেখে নেওয়া যাক।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় খাতায়-কলমে জাফিকুল ইসলাম তার সম্পত্তির যে হিসেব দেখিয়েছিলেন তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, তার হাতে ক্যাশ ছিল ২ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা এবং তার স্ত্রী আরজুমানের হাতে ক্যাশ ছিল ১৮ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। জাফিকুল ইসলামের নামে যে সকল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেগুলিতে ছিল যথাক্রমে ৯ লক্ষ ১৬ হাজার, ৩ লক্ষ ৭০ হাজার, ৫১ লক্ষ ৫২ হাজার এবং ৮৫ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে বিভিন্ন খাতে থাকা সঞ্চয়ের পরিমাণ ৬ লক্ষ টাকা।
এর পাশাপাশি গাড়ি এবং অন্যান্য সঞ্চয় নিয়ে জাফিকুল ইসলামের মোট স্থাবর সম্পত্তি দেখানো হয়েছিল ৯৭ লক্ষ ৬৯ হাজার এবং তার স্ত্রীর ছিল ৭৪ লক্ষ ৩০ হাজার। এছাড়াও চাষযোগ্য জমি বাড়ি ইত্যাদি মিলিয়ে বিধায়কের সম্পত্তি দেখানো হয়েছিল ১২০ লক্ষ টাকার। তার স্ত্রীর সম্পত্তি দেখানো হয়েছিল ৪০ লক্ষ টাকা। বিধায়কের নামে ঋণের পরিমাণ ছিল ৬০ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার। এই হিসাব নির্বাচন কমিশনে দেখিয়েছিলেন বিধায়ক জাফিকুল ইসলাম।