‘দু’পয়সার সাংবাদিক’ থেকে ‘ঘরে ছেলে ঢোকানো’! মহুয়া দিদি, তাপস দাদার এই ৩ কীর্তিতে চর্চায় কৃষ্ণনগর

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : নদীয়ার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র (Krishnanagar Lok Sabha constituency) থেকে সাংসদ হওয়া মানেই যেন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠা। এই বিষয়টি খুব ভালোভাবে নজরে এসেছে শেষ দুবারের সংসদের দিকে চোখ রাখলে। ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটের জিতে সাংসদ হয়েছিলেন তাপস পাল (Tapas Paul)। পরবর্তীতে তাপস পালের অকাল প্রয়াণের পর এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। তবে এই দুজনের ক্ষেত্রেই কিন্তু বিতর্ক পিছু ছাড়েনি।

Advertisements

তাপস পাল থেকে শুরু করে মহুয়া মৈত্রকে বারবার বিভিন্ন কারণে আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। তাপস পাল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছিলেন ‘ঘরে ছেলে ঢোকানো’ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য এবং রোজভ্যালি কান্ড। অন্যদিকে পরবর্তীতে এই কেন্দ্র থেকেই সংসদ হিসাবে পার্লামেন্টে যাওয়া মহুয়া মৈত্র বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন, দু’পয়সার সাংবাদিক, মা কালী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য এবং ক্যাশ ফর কোয়ারি সহ বিভিন্ন কান্ডে। সম্প্রতি ক্যাশ ফর কোয়ারি কাণ্ডে তাকে সাংসদ পদ হারাতেও হয়েছে।

Advertisements

১) কৃষ্ণনগরের সাংসদ হিসেবে তাপস পালের সবচেয়ে বিতর্কিত যে মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিকে তোলপাড় করে দিয়েছিল সেটি হলো ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে দেবেন। ২০১৪ সালের জুন মাসে বিতর্কিত এই ভিডিওটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে নদীয়ার চৌমাথায় এলাকায় এই ভাবেই বিরোধীদের হুমকি দিতে দেখা গিয়েছিল তাকে। তাপস পালের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সেই সময় অনেকদূর পর্যন্ত জল গড়িয়েছিল। নিজের মন্তব্যের স্বপক্ষে বক্তব্য পেশ করেছিলেন তিনি। এমনকি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সেই সময় তার দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল। এছাড়াও তাপস পালের বিতর্কিত দুটি মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছিল।

Advertisements

আরও পড়ুন ? মন বসেনি বিদেশি কর্পোরেট চাকরিতে! বেছে নেন রাজনীতি! কত টাকা কামিয়েছেন মহুয়া মৈত্র

২) একই লোকসভা কেন্দ্র থেকে পরবর্তীতে সাংসদ হওয়া মহুয়া মৈত্রর প্রসঙ্গ যদি আসা যায় তাহলে বলতে হয় তার সবচেয়ে বড় বিতর্কিত মন্তব্য হলো সনাতন ধর্মের শাক্ত দেবী মা কালীকে নিয়ে মন্তব্য। এই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল মূলত ২০২২ সালের জুলাই মাসে। বিতর্ক তৈরি হওয়ার পিছনে ছিল লীনা মণিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্র ‘কালী’র পোস্টার। তাকে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল, “এক এক জনের কাছে ঈশ্বর এক এক রকমের। ভুটান বা সিকিমে ঈশ্বরকে পুজোর সময় সকালে হুইস্কি দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশে তা শুনলে আঁতকে উঠবেন। আমার কাছে কালী এমন একজন দেবী যিনি মাংস খান, মদ্যপান করেন। তারাপীঠের সাধুরা ধূমপান করেন। নিজের মত করে কালীকে কল্পনা করার স্বাধীনতা রয়েছে হিন্দু ধর্মে আর যে কারণে আমার স্বাধীনতায় কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারেন না”।

৩) মহুয়া মৈত্রের রাজনৈতিক জীবনে আরও একটি বড় বিতর্কিত অধ্যায় হল সাংবাদিকদের দু’পয়সা বলে কটাক্ষ করা। ২০২০ সালের এই ঘটনায় তৃণমূলের একটি কর্মীসভা চলাকালীন সেখানে কয়েকজন সাংবাদিক প্রবেশ করেছিলেন এবং সেই সময়ই তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল ‘কে এই দু’পয়সার প্রেসকে ভেতরে ডাকে?’ এই ঘটনাকে নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের বড় অংশ মহুয়া মৈত্রকে বয়কট করেছিলেন। পরিস্থিতি-বেগতিক দেখে এবং চরম চাপে পড়ে শেষমেশ মহুয়া মৈত্র এই ঘটনাকে নিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন।

তবে মহুয়া মৈত্রের রাজনৈতিক জীবনে বিতর্কিত অধ্যায় এত ছোট নয়। এছাড়াও সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া ক্যাশ ফোর কোয়ারি দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় তাকে নিয়ে এমন সব ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে যেগুলি প্রতিনিয়ত বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা যেতে পারে কৃষ্ণনগর এবং কৃষ্ণনগর থেকে আসা সাংসদরা গত কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক বজায় রেখেছেন রাজ্য রাজনীতিতে। এই বিষয়টি নিয়ে কৃষ্ণনগরের অনেকেই রয়েছেন যারা মনে করছেন তাদের মাথা হেঁট হচ্ছে বারবার।

Advertisements