নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারত থেকে বর্ডার হয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) বিভিন্ন সময় নানান জিনিসপত্র পাচার হতে দেখা যায়। পাচার হওয়া এই সকল জিনিসপত্রের মধ্যে রয়েছে গরু, সোনা, রুপো, বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সহ আরও জিনিসপত্র। মূলত বাংলাদেশে যেসবের চাহিদা সবচেয়ে বেশি অথচ যোগান নেই, সেইসব জিনিসপত্রই বর্ডার হয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হয়ে থাকে। তবে এবার যে জিনিসটি পাচার হতে দেখা গেল তা শুনলে আপনি হেসে গড়াগড়ি দেবেন।
এর আগে আমরা দেখেছি গরু পাচার থেকে শুরু করে সোনা, রুপো ইত্যাদি পাচার করতে গিয়ে বহু পাচারকারীকে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স, কাস্টমস এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়তে। আমরা দেখেছি গরু পাচার কাণ্ডে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল, তার প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গাল হোসেন সহ আরও সব প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জেলের ভাত খেতে। কিন্তু এসবকে অতীত করে এবার এই জিনিসটি পাচার হবে তা কেউ ভেবে উঠতে পারছেন না।
আসলে এখন ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার করার জন্য পাচারকারীদের সবচেয়ে পছন্দের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে পেঁয়াজ (Onion)। অতিবৃষ্টি থেকে শুরু করে নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এবং সেই পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ভারত সরকারের তরফ থেকে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলেই বাংলাদেশে আকাল পড়ছে পেঁয়াজের। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই পাচারকারীরা এখন গরু, সোনা, রুপো, নিষিদ্ধ ওষুধ ভুলে পেঁয়াজ পাচার করতে ব্যস্ত।
আরও পড়ুন ? আর দিতে হবে না বেশি দাম! পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি কমাতে কড়া পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র
পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর এখন সন্ধ্যা নামলেই আরতগুলিতে হুড়মুড়িয়ে ভিড় জমছে। চলছে দেদার পেঁয়াজ কেনার কাজ। তারপর কয়েক কিলোমিটার হেঁটে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর প্রহরা আর কাঁটাতার টপকে বাংলাদেশের দিকে সেই পেঁয়াজের বস্তা ফেলতে পারলেই কেল্লাফতে। ভারত থেকে বাংলাদেশে এক বস্তা পেঁয়াজ ফেলতে পারলেই পাচারকারীদের পকেটে ঢুকছে কড়কড়ে ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা। এই টাকা কেবল ঢুকছে পাচারকারীদের পকেটে। পেঁয়াজের দাম আলাদা। স্বাভাবিকভাবেই পেঁয়াজ এখন পাচারকারীদের সেরা পছন্দের জিনিস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ৫০ কেজির এক বস্তা পেঁয়াজ ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচারের জন্য পেঁয়াজের দাম সহ পাচারকারীরা পাচ্ছেন প্রায় ১০ হাজার টাকা। গরু, সোনা ইত্যাদি পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়লে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। সেই জায়গায় এখন পেঁয়াজ অনেক ঝুঁকিহীন পাচারের বস্তু হয়ে দাঁড়ানোর কারণে পেঁয়াজ পাচার করাই পছন্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে পাচারকারীদের কাছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পরই বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম দাঁড়িয়েছিল ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কিলো। এই পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের দাম আগামী দিনে বাংলাদেশে আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।