নিজস্ব প্রতিবেদন : এখনকার দিনে আর লটারিতে (Lottery) কোটি টাকা জেতা নতুন কিছু নয়। প্রতিদিনই কোন না কোন জায়গার লটারি প্রেমীদের কোটি কোটি টাকা জিততে দেখা যাচ্ছে। তবে এই সকল ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় খবরে আসেন মূলত তাদের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে লটারিতে কোটি টাকা জিতে ভাগ্য বদলানোর পরিপ্রেক্ষিতে। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের এক রাজমিস্ত্রি দম্পতি এবার শিরোনামে এসেছেন মূলত কোটি টাকা জেতার (Lottery Win) আনন্দের খবর পেয়ে ছেলের চিকিৎসা ভুলে বাড়ি ফেরার কারণে।
মুর্শিদাবাদের রাণীনগরের সুখচাঁদ আনসারী গত চার বছরের বেশি সময় ধরে লটারির টিকিট কাটতেন। বড় পুরস্কারের আশায় তিনি দিনের পর দিন লটারি কেটে যেতেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি সুখচাঁদ আনসারী এইভাবে লটারির টিকিট কাটার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের রোজগারের অধিকাংশ টাকা ফুটিয়ে দিতেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়সই অশান্তি লেগে থাকতো। তবে এই লটারিতেই ভাগ্য ফিরিয়ে দিল তাদের।
জানা গিয়েছে, সুখচাঁদের ছেলে কোন এক রোগে আক্রান্ত এবং তার জন্য তাকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে যেতে হয়। চিকিৎসার জন্য ৩০-৪০ হাজার টাকা এখনো পর্যন্ত খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে লটারিতে কোটি টাকা জেতার দিনে তারা ছেলের চিকিৎসার জন্য কলকাতা যাচ্ছিলেন। কিন্তু বহরমপুর রেল স্টেশনে পৌঁছাতেই তাদের কাছে খবর আসে লটারির টিকিটে কোটি টাকা জেতার বিষয়ে। আর সেই খবর পেয়েই চিকিৎসা করাতে যাওয়ার প্ল্যান বাতিল করে সটান ফিরে আসেন বাড়িতে।
আরও পড়ুন ? Lottery Winning Tricks: লটারি জিততে চান, এই ৫ কৌশলে হতে পারেন কোটিপতি
সুখচাঁদের স্ত্রী জানিয়েছেন, “লটারিতে কোটি টাকা জেতার খবর এতেই আমরা কলকাতা যাওয়ার প্ল্যান বদলে ফেলি। বহরমপুর থেকে ওষুধ কিনে বাড়ি ফিরি। ও (সুখচাঁদ) যেতে চেয়েছিল কিন্তু আমি বলেছিলাম বাড়ি চলো, যা হবে পরে দেখে নেব।” আসলে যেকোনো নিম্নবিত্ত পরিবারের কাছে এক কোটি টাকা স্বপ্নের থেকেও অনেক বেশি। আর সেই স্বপ্নকে তারা কোনভাবেই হাতছাড়া করতে চাননি।
অন্যদিকে লটারিতে এক কোটি টাকা জেতার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন তাদের বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন। এমনকি পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে সুখচাঁদ আর বাড়িতে না থেকে পৌঁছে যান থানায়। থানায় পৌঁছে যাওয়ার বিষয়েও সুখচাঁদের স্ত্রী জানিয়েছেন, ‘আমরাই থানায় রেখে এসেছি।’ দীর্ঘ চার বছর ধরে লটারির টিকিটের পিছনে হাজার হাজার টাকা দেওয়ার পর শেষে কোটি টাকা জয় সুখচাঁদের পরিবারে এনে দিয়েছে খুশির হাওয়া। এছাড়াও তারা এই টাকা দিয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি অসুস্থ ছেলের ভালো ভাবে চিকিৎসা করাবেন বলেও জানিয়েছেন।