নিজস্ব প্রতিবেদন : দীঘা (Digha) পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম। তবে দীঘা শুধু পর্যটন কেন্দ্র নয়, পাশাপাশি দিঘার একটি অন্য গুরুত্ব রয়েছে। দীঘার সেই গুরুত্ব হল মৎস্য নিলাম কেন্দ্রের পরিপ্রেক্ষিতে। কেননা দীঘাই হল পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় মৎস্য নিলাম কেন্দ্র। যে কারণে এখান থেকে প্রতিদিনই প্রচুর পরিমাণে মাছ রাজ্যের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হয়।
পর্যটন থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষই রেল পরিষেবাকে ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে দীঘা থেকে ওড়িশার জলেশ্বর অথবা দক্ষিণ ভারতের কোন জায়গায় যাতায়াত করার ক্ষেত্রে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয়। এই সমস্যার সমাধানের জন্য রেলের তরফ থেকে দীঘা থেকে জলেশ্বর রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ চালানো হচ্ছে। এর ফলে আর খড়গপুর অথবা হাওড়ার উপর নির্ভরশীল হতে হবে না।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত রকম চট ছাড়িয়ে দ্রুতগতিতে দীঘা থেকে জলেশ্বর পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ চালানো হচ্ছে। মোট ৭২ কিলোমিটার রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ হবে। এই কাজের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছিল ২০১১-১২ সালে। তবে জমি জটের কারণে কাজ আটকে ছিল আর এখন সেই কাজ দ্রুতগতিতে চলছে সমস্ত জমি জট মিটিয়ে। এই রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজ হয়ে যাওয়ার পর দিঘার ভোল বদলে যাবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। একদিকে যেমন বাড়বে পর্যটকদের আরও বেশি আগমন, ঠিক সেই রকমই বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য।
আরও পড়ুন ? Sikaritar: ভুলে যান দিঘা, পুরি, এবার ১২০০ টাকা খরচে তাঁবুতে রাত কাটান এই জায়গায়
এই রেল প্রকল্পের জন্য রেলের তরফ থেকে ১৫৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রকল্প সম্পূর্ণ করার জন্য প্রয়োজন ৫০৭ একর জমি। বিপুল পরিমাণ এই জমির মধ্যে ৩৭০ একর জমি রয়েছে ওড়িশায় ও ১৩৭ একর জমি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জমি অধিকগ্রহণ প্রক্রিয়ার ঢিলেমির কারণেই এই প্রকল্পের কাজে এতটা দেরি হয় বলেই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ। সম্প্রতি স্থানীয় সাংসদ শিশির অধিকারী এই রেল প্রকল্পের কাজ নিয়ে জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
দীঘা থেকে জলেশ্বর পর্যন্ত রেল প্রকল্প খুব তাড়াতাড়ি বাস্তবায়িত হবে এবং এর কাজ দ্রুত গতিতে চলছে তা নিয়ে আগেও জানিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। অন্যদিকে দীঘা থেকে জলেশ্বর পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ হয়ে গেলে যে সকল ট্রেন হাওড়া থেকে দক্ষিণ ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সেগুলি অনেক সুবিধা পাবে। কেননা খড়গপুর জলেশ্বর হয়ে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার ক্ষেত্রে যে রুট ব্যবহার করা হয় তা অত্যন্ত ব্যস্ত রুট এবং তাতে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়া খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ট্রেন চালকদের সামনে। এখন এই নতুন রুটে অনেক সহজেই দক্ষিণ ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া যাবে।