নিজস্ব প্রতিবেদন : অবশেষে সোমবার ৪ মার্চ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তাফা দিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy)। লোকসভা ভোটের আগে এইভাবে তার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তাফা দেওয়া এবং তৃণমূল ত্যাগ করার পিছনে নানান জল্পনা দিচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। মনে করা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি তিনি হয়তো বিজেপিতে যোগ দেবেন এবং তাকে বিজেপির টিকিটে লোকসভার প্রার্থী করা হবে। যদিও এই বিষয়ে তৃণমূল ত্যাগী প্রাক্তন বিধায়ক তাপস রায় এখনো কিছু জানাননি।
অন্যদিকে তাপস রায়কে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তাফা দেওয়া এবং তৃণমূল ত্যাগ করার পর দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করতেও দেখা গিয়েছে। তিনি নিজের প্রাক্তন দলকে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ এনেছেন। এছাড়াও সন্দেশখালির ঘটনা তাকে নাড়িয়ে দিয়েছে বলেও দাবি করেছেন। পাশাপাশি দলের শীর্ষস্থানীয় বেশ কিছু নেতাদের বিরুদ্ধে অভিমানের সঙ্গে অভিযোগ আনতেও দেখা গিয়েছে। তবে তাপস রায় দলের সঙ্গে দীর্ঘ ২৩ বছরের সম্পর্ক এইভাবে শেষ করে দেবেন অনেকেই ভেবে উঠতে পারছেন না।
দীর্ঘ ২৩ বছরের বেশি সময় ধরে তৃণমূলের সঙ্গে রাজনীতিতে থাকার তাপস রায়কে নিয়ে এখন মানুষের মধ্যে কৌতূহলের শেষ নেই। অনেকেই তার সম্পত্তি এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে নানান খোঁজখবর শুরু করেছেন। আমরা সেই সকল তথ্য নিয়েই হাজির এই প্রতিবেদনে। তাপস রায় একজন উচ্চ শিক্ষিত রাজনীতিক। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট পল কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে বিএসসি পাশ করেছিলেন। বিএসসি পাশ করার পর আবার তিনি আইন নিয়েও পড়াশোনা শুরু করেছেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুরেন্দ্রনাথ ল কলেজ থেকে ১৯৮৬ সালে আইনে স্নাতক। পড়াশুনোয় ভালো হওয়ার পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতেও একজন ভালো মুখ।
তাপস রায়ের বার্ষিক আয় এবং সম্পত্তি সম্পর্কে ২০২১ সালের নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হলফনামা থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে তার বার্ষিক রোজগার ছিল ৩,৫৬,২৮০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তার বার্ষিক রোজগার ছিল ৪,৯১,৮৬০ টাকা। একই ভাবে তাঁর স্ত্রী শুভ্রা রায়ের ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে বার্ষিক রোজগার ছিল ৯,৯৭,৭৩০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বার্ষিক রোজগার ছিল ১১,৪৩,০৬০ টাকা।
২০২১ সালে ভোটের সময় তার ব্যাঙ্ক সেভিংস অ্যাকাউন্টে ছিল ৬,৯৩,৯৩৬ টাকা। ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ ছিল ২৩ লক্ষ ২০ হাজার ৫৫৯ টাকা। পিপিএফের পরিমাণ ছিল ১৪ লক্ষ ৫৪ হাজার ৪৮৬.০০ টাকা। তাঁর নামে ৬০ গ্রাম সোনা ছিল বলে তিনি জানিয়েছিলেন এবং সেই সময় যার বাজার মূল্য ছিল ২,৮২,০০০ টাকা।
তার স্ত্রীর নামে ব্যাঙ্ক সেভিংস অ্যাকাউন্টে ছিল ২,৪৮,৫৬৩ টাকা। ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ ছিল ৮৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮৯৩ টাকা। এসবি পিও ১৯,২৩৩ টাকা। পিপিএফের পরিমাণ ছিল ২৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৭৪ টাকা। তাঁর নামে ২২০ গ্রাম সোনা ছিল বলে তিনি জানিয়েছিলেন এবং সেই সময় যার বাজার মূল্য ছিল ১০ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগ রয়েছে এবং তার পাশাপাশি সম্পত্তি রয়েছে। সব মিলিয়ে তাপস রায়ের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৬৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৪৮১ টাকা এবং তার স্ত্রীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ৫০ লক্ষ ২৩ হাজার ৬৬৩ টাকা।