নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রতিদিন ভারতীয় রেলের (Indian Railways) পরিষেবার উপর ভর করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করেন। যে সকল যাত্রীরা ট্রেনে চড়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করেন তাদের বাধ্যতামূলকভাবে রাখতে হয় বৈধ টিকিট। কিন্তু অনেক সময় ওয়েটিং লিস্ট, আরএসি অথবা যাত্রা বাতিল করার কারণে যাত্রীদের টিকিট বাতিল করতে হয়। আর এই বাতিল করা টিকিট থেকেই হাজার হাজার কোটি টাকার রোজগার (Railways Cancelled Ticket Income) করেছে ভারতীয় রেল গত তিন বছরে।
আরটিআই আইনের একটি প্রশ্নের ভিত্তিতে ভারতীয় রেলের তরফ থেকে এমনই উত্তর দেওয়া হয়েছে। যে উত্তরে দেখা যাচ্ছে যেভাবে ভারতীয় রেল বাতিল করা টিকিট থেকে রোজগার করেছে তাতে বাতিল টিকিট রেলওয়ের কাছে রাজস্বের একটি উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রেল হাজার হাজার কোটি টাকা রোজগার করেছে বাতিল টিকিট থেকে। অঙ্কটা ঠিক কত জেনে নেব।
রেলের নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যক্তির টিকিট যদি ওয়েটিং লিস্ট অথবা আরএসি-তে থাকে তাহলে তিনি টিকিট বাতিল করলে তাকে ৬০ টাকা দিতে হয়। কনফার্মড টিকিট যাত্রার ৪৮ ঘণ্টা আগে বাতিল করা হলে এসি ফার্স্ট ক্লাস বা এক্সিকিউটিভ ক্লাসের জন্য ২৪০ টাকা কাটা হয়, এসি টু টায়ারের জন্য কাটা হয় ২০০ টাকা, এসি ৩ টায়ার বা এসি চেয়ারকার অথবা এসি ৩ ইকোনমি ক্লাসের জন্য কাটা হয় ১৮০ টাকা, স্লিপার ক্লাসের জন্য কাটা হয় ১২০ টাকা, সেকেন্ড ক্লাসের জন্য কাটা হয় ৬০ টাকা।
আবার কোন টিকিট যদি ৪৮ ঘন্টা থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাতিল করা হয় তাহলে টিকিটের মূল্যের ২৫ শতাংশ কেটে নেয় রেল। একইভাবে যদি যাত্রার ৪ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘন্টার মধ্যে টিকিট বাতিল করা হয় তাহলে টিকিটের দামের ৫০ শতাংশ কেটে নেয় রেল। যদি কোন টিকিট যাত্রা করার ৪ ঘন্টার মধ্যে বাতিল করা হয় তাহলে কোন টাকা ফেরত পাওয়া যায় না। আর এই সকল নিয়ম থেকেই রেল গত তিন বছরে বিপুল টাকা রোজগার করেছে।
রেলের তরফ থেকে দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে রেল বাতিল টিকিট থেকে রোজগার করেছে ১২২৯ কোটি টাকা। ২০২১ সালে মোট টিকিট বাতিল হয়েছিল ২.৫৩ কোটি, ২০২২ সালে টিকিট বাতিল হয়েছিল ৪.৬ কোটি, ২০২৩ সালে টিকিট বাতিল হয়েছিল ৫.৩৬ কোটি, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে টিকিট বাতিল হয়েছে ৪৫.৮৬ কোটি। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে যথাক্রমে রোজগার হয়েছে ২৪২.৬৮ কোটি টাকা, ৪৩৯ কোটি টাকা, ৫০৫ কোটি টাকা এবং ৪৩ কোটি টাকা।