নিজস্ব প্রতিবেদন : চলতি বছর অন্যান্য বছরে তুলনায় বেশ কয়েক দিন দীর্ঘস্থায়ী হয় শীত। শীতের দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পাশাপাশি আবার গ্রীষ্মের শুরুতেই গরমে হিমশিম খেতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের। তবে এমন পরিস্থিতি কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই নয়, গোটা দেশেই এমন পরিস্থিতি নজরে এসেছে। এই বছর মৌসম ভবনের তরফ থেকে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, তীব্র গরমের পাশাপাশি দেশের মানুষকে সহ্য করতে হবে তাপপ্রবাহ। মার্চ, এপ্রিল মাসের পাশাপাশি মে মাসেও গরম কম হবে না হলেই জানানো হয়েছে।
মূলত জুন মাসে ভারতে বর্ষার (Monsoon India) আগমন হয়ে থাকে। তবে এবার গ্রীষ্ম এবং বর্ষার সমীকরণ বদলে যেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে এমনটা মনে করার পিছনে রয়েছে লা নিনা। আর এর জেরেই ভারতে উলটপালট হয়ে যেতে পারে বর্ষার মরসুম।
লা নিনা হলো এল নিনোর ঠিক বিপরীত। এখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পূর্ব থেকে পশ্চিমে বয়ে চলা বায়ুর পরিবর্তন ঘটে। উষ্ণ জলস্রোত প্রবাহিত হতে থাকে পশ্চিম দিকে। আবার লা নিনা চলাকালীন সমুদ্রের গভীরে ঠান্ডা জল উঠে চলে আসে সমুদ্রের উপরিভাগে। আর এর ফলেই পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ঠান্ডা হয়ে যায়। এল নিনো যেমন তীব্র গরম, তাপপ্রবাহের কারণ, ঠিক এর উল্টোটা হলো লা নিনা। আর লা নিনা প্রভাব ফেলতে পারে বর্ষার উপর।
লা নিনার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বদলে দেয় স্বাভাবিক আবহাওয়া। চলতি বছর সেই রকমই কিছু ঘটতে চলেছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। চলতি বছর লা নিনার প্রভাবেই অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে বিশ্বের বেশ কিছু অঞ্চলে। যে সকল অঞ্চলে অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে সেই সকল অঞ্চলগুলি হল ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পূর্ব আফ্রিকা, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে।
যে কারণে এবার বর্ষাকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগ হলো এপ্রিল থেকে জুলাই এবং দ্বিতীয় ভাগ হলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। প্রথম ভাগে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে এল নিনোর প্রভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং দ্বিতীয় ভাগে অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যেতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে স্বাভাবিক নিয়মে বর্ষা ঢোকার ক্ষেত্রে যে সময়সীমা রয়েছে তা হলো ১০ জুন। এবার পশ্চিমবঙ্গে কবে বর্ষার আগমন ঘটতে পারে তা সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত আলিপুর হাওয়া অফিসের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গে কবে বর্ষার আগমন ঘটবে তা নির্ভর করছে কেরলে কত তাড়াতাড়ি বর্ষা ঢোকে তার উপর। আবার কেরলে তাড়াতাড়ি বর্ষা ঢুকলেও পশ্চিমবঙ্গে তাড়াতাড়ি বর্ষার আগমন হবে তারও কোন গ্যারান্টি নেই। যদিও আবহবিদরা মনে করছেন, চলতি বছর সময়ের আগেই বর্ষার আগমন হতে পারে, আবার বৃষ্টির পরিমাণও বেশি থাকতে পারে।