This Ram Mandir in Chhattisgarh finally opened after 21 years of being closed in fear: মাওবাদী সংগঠনগুলির উল্লেখযোগ্য পাকাপোক্ত ঘাঁটিগুলির মধ্যে অন্যতম ছত্রিশগড়ের সুকমা এলাকা। একসময় মাওবাদীরা ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে এই এলাকায়। মাওবাদীদের দাপটে এই এলাকার বিখ্যাত রাম মন্দির তথা সুকমার রাম মন্দিরের (Chhattisgarh Ram Mandir) দরজা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল স্থানীয় মানুষ। মাওবাদীরা এই মন্দিরটিকে ধূলিসাৎ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। আর সেই আতঙ্কেই তারপর থেকে আর কোনদিন এই রাম মন্দিরের দরজা খোলার সাহস হয়নি কারো।
প্রায় ২১ বছর ধরে এই রাম মন্দিরের দরজা বন্ধ ছিল। এখন আর এই এলাকায় মাওবাদীদের তেমন দাপট নেই সেই সময়কার মাওবাদী আতঙ্ক এখন অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর সেই সাহস থেকেই ২১ বছর পর রাম নবমীর আগে নতুন করে সুকমার রাম মন্দিরের (Chhattisgarh Ram Mandir) দরজা খুললো স্থানীয় বাসিন্দারা। ছত্রিশগড় রাজ্যের সুকমা জেলার কেরলাপেন্ডা গ্রামে অবস্থিত এই রাম মন্দির। ২১ বছর পর মন্দিরের সামনে ভিড় জমালো স্থানীয় ভক্তরা। বিগ্রহ সহ সম্পূর্ণ মন্দির চত্বর পরিষ্কার করার মধ্যে দিয়ে নতুন করে শুরু হলো রাম আরাধনা।
২১ বছর আগে সুকমার এই এলাকা মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ছিল। তাদের উচ্চ পর্যায়ের সব রকম ক্রিয়াকলাপের বৈঠক করা হতো এই মন্দির চত্বরে, এমনকি মাওবাদীদের নিজস্ব গ্রিন করিডোর হিসাবে ব্যবহার করত এই মন্দির চত্বর টিকে। এই মন্দির চত্বরে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয় মাওবাদীরা। ২০০৩ সালের পর থেকে মাওবাদীদের দাপটে সাধারণ ভক্তদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় মন্দির চত্বরে। ফলত, খুব স্বাভাবিক নিয়মেই বন্ধ করতে হয় মন্দিরটিকে (Chhattisgarh Ram Mandir)। এরপর থেকে ২১ বছর ধরে একটি মাত্র গ্রামবাসী প্রতিদিন নিয়ম করে প্রদীপ জ্বেলে আসতেন মন্দিরের দরজার সামনে।
আরও পড়ুন ? Ram Setu: রাম মন্দির অতীত, এবার রাম সেতু বানাবে কেন্দ্র! সামনে এলো বড় পরিকল্পনা
২০১০ সালেও এই এলাকা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে নৃশংসভাবে খুন করা হয় ৭৬ জন জওয়ানকে। ২০২১ সালেও রক্তাক্ত হতে দেখা গেছে গ্রামের এলাকা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। এতদিন পর্যন্ত ভয়ে এলাকার বাইরের কারো সাথে কথাই বলতেন না গ্রামবাসীরা। কিন্তু ইদানিং জঙ্গলে ঘেরা এই এলাকায় বসানো হয়েছে সিআরপিএফ ক্যাম্প। নিয়মিত টহল দিচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করছে প্রতিরক্ষা বাহিনী। টহল দেয়ার সময় এই মন্দিরটি চোখে পড়ে সিআরপিএফ এর সদস্যদের। গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে তারা জানতে পারেন মন্দিরের (Chhattisgarh Ram Mandir) ইতিহাস। সিআরপিএফ জওয়ানদের মতে পাথর দিয়ে তৈরি করা এই মন্দিরটির বয়স কমপক্ষে ২০০ বছরেরও বেশি।
কেরলাপেন্ডা গ্রামের গ্রামবাসীরা সিআরপিএফ সদস্যদের অনুরোধ করেন নতুন করে এই মন্দিরটির দরজা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য। গ্রামবাসীদের অনুরোধ কে স্বীকৃতি জানাতে সিআরপিএফ এর তরফ থেকে ২১ বছর পর খোলা হয় রাম মন্দিরের (Chhattisgarh Ram Mandir) দরজা। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে রাম মা সীতা ও লক্ষণ এর বিগ্রহ। গ্রামবাসীরাই নতুন করে মন্দির চত্বর সহ বিগ্রহ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে পুজোর ব্যবস্থা করেন। সামনেই ১৭ই এপ্রিল রামনবমী উপলক্ষে নতুন করে পুজো দিয়ে চালু করা হবে এই মন্দির। রামনবমী উপলক্ষে ঠিক আগের মতন বড় করে পূজোর আয়োজন করেছে গ্রামবাসীরা। আগে এই এলাকায় রামনবমী উপলক্ষে বড় মেলা বসত। মাওবাদীদের হাতে পড়ে সেই মেলার ধারে কাছে যাওয়া নিষিদ্ধ হয়ে যায়। আবারো একইভাবে পূজো করতে চাইছে গ্রামবাসীরা।