Come out of Mini Switzerland of India this summer: শহরের কোলাহল থেকে দূরে নিরিবিলিতে প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটাতে চান কয়েকটা দিন? তাহলে কিছুদিনের জন্য এই গ্রাম থেকে ঘুরে আসতে পারেন। সবুজে ঘেরা গ্রামটি যেন প্রকৃতির কোলে একমুঠো শান্তির উৎস। হিমাচল প্রদেশের চাম্বা জেলায় অবস্থিত একটি ছোট্ট গ্রাম খাজিয়ার। এই গ্রামের আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য, গ্রামটিকে সুইজারল্যান্ডের সাথে তুলনা করা হয়। অনেকে একে ভারতের মিনি সুইজারল্যান্ড (Mini Switzerland) বলেও চিহ্নিত করেন। সবুজে যে ঢাকা উপত্যকা, মাথার উপর নীল আকাশ, তাতে সাদা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। যেন হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে মেঘগুলিকে।
ছোট্ট একটি লেক, পাহাড়ের ঢাল বরাবর রংবেরঙের বাড়ি আর পাইনের বন। গ্রাম নয়, যেন হাতে আঁকা কোন ছবি খাজিয়ার। শীতকালে বরফাবৃত হয়ে থাকে পুরো গ্রামটি। গরমের ছুটি কাটাতে কিছুদিনের জন্য ঘুরে আসতেই পারেন মনকারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা খাজিয়ার গ্রাম থেকে। পাইন বনে গাছের ফাঁক দিয়ে সূর্য রস্মি এসে পড়ছে মাটিতে। যেন এক মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে চারিদিকে। সবুজে ঘেরা উপত্যকার মাঝে ছোট্ট একটি লেক। সেখানে নৌকা বিহারের ব্যবস্থাও রয়েছে। ছবি দেখলে এই গ্রামটিকে সুইজারল্যান্ড বলে মনে হতেই পারে। সুইজারল্যান্ডের সরকারও এই গ্রামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ। তারাই এই গ্রামকে “সুইজারল্যান্ড অফ ইন্ডিয়া” (Mini Switzerland) নামে অভিহিত করেছেন। এই নামের একটি স্মারক ফলকও বসানো রয়েছে খাজিয়ার গ্রামে।
খাজিয়ার গ্রামের চারিপাশে পাহাড়ি পথে ট্রেক করার ব্যবস্থাও রয়েছে। শারীরিক কোন অসুবিধা না থাকলে খুব সহজেই ট্রেক করতে পারবেন এই রাস্তাগুলিতে। খাজিয়ার থেকে ট্রেক করে যাওয়া যায় দইকুন্ডু পর্যন্ত। মধ্যবর্তী ৩ কিলোমিটার রাস্তার সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। ভাগ্য ভালো থাকলে, আর আকাশ পরিস্কার থাকলে এই পথের মাঝে দেখা মিলতে পারে পিরপাঞ্জাল ও ধৌলধার পর্বতমালার। পৌরাণিক মতে শিবের বাসস্থান কৈলাশ পর্বতে। এই পর্বতের শোভা দেখার জন্যও পর্যটকরা আসেন খাজিয়ার (Mini Switzerland) গ্রামে। দেখে আসতে পারেন ৬৫ ফুট উঁচু শিবের মূর্তি। এছাড়াও রয়েছে প্যারা গ্লাইডিং ও জোর্বিংয়ের ব্যাবস্থাও।
আরও পড়ুন ? Tourist Destination: হাতে সময় কম! একদিনের দিনের জন্য ঘুরে আসতে বেছে নিন হাতের কাছেই থাকা এই স্পট
ডালহৌসি ও চাম্বা শহরের সবুজ ঘেরা উপত্যকার মাঝে, শুধুমাত্র খাজিয়ার হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ করতেই এই গ্রামে যান বহু পর্যটক। এছাড়া এখানে রয়েছে হিমাচলের প্রাচীন মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম খাজি নাগের মন্দির। দ্বাদশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরের দেওয়ালে, মোগল শৈলী ও হিন্দুত্বের দুর্দান্ত মেলবন্ধন লক্ষ্য করা যায়। লেকের পাশেই সোনার দেবী নামে একটি কালি মন্দির রয়েছে। মন্দিরের সোনালি রংয়ের গম্বুজ আর মনোরম পরিবেশের টানে পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে এই গ্রামে। খাজিয়ার গ্রাম থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটারের দূরত্বে রবি নদীর ধারে অবস্থিত কালাটোপ অভয়ারণ্য। দেবদারু গাছের ঘন জঙ্গলে আছে চিতাবাঘ, শেয়াল, লেঙ্গুর, ভাল্লুক ও বিভিন্ন ধরনের বন্য পাখির বাস। জঙ্গল সাফারির ব্যবস্থাও আছে অভয়ারণ্যটিতে।
এখানে হোটেল, রিসোর্ট, হোমস্টে সব রকম ব্যবস্থাই রয়েছে। আপনি নিজের পচ্ছন্দ মতো জায়গায় থাকতে পারেন। তবে হিমাচলের আতিথেয়তা পেতে চাইলে হোমস্টেগুলিকে বেছে নিতে পারেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে হিমাচলের খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন। খজিয়ার (Mini Switzerland) গ্রাম থেকে যেতে পারবেন ছোট্ট পাহাড়ী শহর ধরমশালায়। এই শহরে তিব্বতী শরণার্থীদের ঔপনিবেশ গড়ে উঠেছে দলাই লামার উদ্যোগে। এছাড়াও আছে ডালহৌসি। সারিবদ্ধ পাইন বনে ঘেরা শৈল শহর ডালহৌসির সাথে স্কটল্যান্ডের মিল পেয়েছিলেন ব্রিটিশরা।