নিজস্ব প্রতিবেদন : শক্তি বাড়িয়ে ধীরে ধীরে ভূ-ভাগের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল (Cyclone Remal)। তার শক্তি দেখে এখন হাওয়া অফিসের তরফ থেকে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলায় লাল সতর্কতা (Cyclone Remal Red Alert) জারি করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, রবিবার থেকেই এই ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব দেখাতে শুরু করবে। আর সেই মতোই হাওয়া অফিসের তরফ থেকে সতর্কবার্তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক স্তরে সমস্ত রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
হাওয়া অফিসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থান ছিল ঘূর্ণিঝড় রেমালের। এটি ক্যানিং থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে ৩৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে, সাগরদ্বীপ থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে এবং খেপুপাড়া থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ৩৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এই দূরত্ব আস্তে আস্তে কমিয়ে রবিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল সংলগ্ন এলাকা পার করবে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রবিবার এবং সোমবার দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জায়গাতেই বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তবে শক্তির বিষয়টি মাথায় রেখে ২৬ মে অর্থাৎ রবিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে। এই সকল জেলায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি কোন কোন জায়গায় ১২ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। আবার উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোন কোন জায়গায় ২০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া ও পূর্ব বর্ধমানের ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও রবিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন ? Kedarnath Helicopter Accident: বন বন করে পাক খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল হেলিকপ্টার! কেদারনাথে ঘটল বিপত্তি
২৭ মে অর্থাৎ মঙ্গলবার লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলায়। এই দুই জেলায় ১২ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টির পাশাপাশি কোন কোন জায়গায় ২০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে লাল সতর্কতা জারি না করা হলেও বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১২ থেকে ২০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এবার যদি ঝড়ের গতিবেগের দিকে নজর রাখা যায় তাহলে দেখা যাবে রবিবার ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুরে। ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতি বেগে ঝড় বইতে পারে নদীয়া এবং পূর্ব বর্ধমানে। অন্যদিকে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতে। ২৭ তারিখ অর্থাৎ সোমবার ঘন্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ের দেখা মিলতে পারে নদীয়া ও মুর্শিদাবাদে। ঘন্টায় ৫০ থেকে ৬০, সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ের দেখা মিলতে পারে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমানে। বাকি জেলাগুলিতে ৪০ থেকে ৫০, সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ের দেখা মিলতে পারে।