The net worth of current IPL winner KKR will surprise you too: ভারতের বিভিন্ন খেলার মধ্যে দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। গোটা বিশ্বে এখন এই খেলাটি যথেষ্ট চর্চিত। পৃথিবীর সবথেকে সফল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ কিংবা আইপিএল। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের অর্থাৎ বিসিসিআই একটি নিখুঁত ব্যবসায়িক মডেল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। লিগের এত বছরের যাত্রায় বিসিসিআইকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে সাহায্য করেছে। শুধুমাত্র বিসিসিআই নয় বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি এই লিগের মাধ্যমে যথেষ্ট পরিমাণে অর্থ উপার্জন করেছে। যার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ তালিকায় নাম রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স এর (Net Worth of KKR)। কলকাতা নাইট রাইডার্স তৃতীয়-সবচেয়ে সফল আইপিএল দল, যার মোট সম্পত্তির পরিমাণ হলো ৭৪০ কোটি টাকা। ধনী ফ্রাঞ্চাইজি দলের মধ্যে বর্তমানে এটি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। সর্বপ্রথম তালিকায় নাম রয়েছে নীতা আম্বানির টিম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স যাদের নেট মূল্য ৮০৩ কোটি।
কলকাতা নাইট রাইডার্স এর আয়ের বিভিন্ন উৎস রয়েছে (Net Worth of KKR)। যার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য উৎস হলো পুরস্কারের অর্থ। এখন পর্যন্ত কেকেআর যে কটি পুরস্কার পেয়েছে তার মধ্যে ২০১২ এবং ২০১৪ সালে তাদের দুর্দান্ত শিরোপা জয়ের সাথে দুইবার মর্যাদাপূর্ণ আইপিএল পুরস্কারের পরিমাণ জিতেছে। ২০১২ সালে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK) থেকে চ্যাম্পিয়নদের শিরোপা ছিনিয়ে নিয়ে, KKR টুর্নামেন্টের শেষে ১০ কোটি টাকা পেয়েছে। ২০১৪ সালে, তারা এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব কিংসকে তিন উইকেটে পরাজিত করে ট্রফি দিতেছিল। এই জয় তাদের এনে দিয়েছে ১৫ কোটি টাকা। পাশাপাশি তারা ২০২১ সালে ইয়ন মরগানের নেতৃত্বে ফাইনালে উঠেছিল কিন্তু ডি-ডেতে ২৭ রানে চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) কাছে হেরে যায়। ২০২৪ সালে কেকেআর চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ঘরে আসে ২০ কোটি টাকা।
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ২০২৩-২৭ মরশুমের জন্য T20 টুর্নামেন্টের মিডিয়া স্বত্ব বিক্রি করা হয়েছিল ৪৮,৩৯০ কোটি টাকায়। এই চুক্তিটি সকল মিডিয়ার মূল আকর্ষণ ছিল কারণ এটি আমেরিকার জাতীয় ফুটবল লিগের পরে আইপিএলকে বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে মূল্যবান লিগে পরিণত করেছিল। এই আর্থিক সাফল্য কিন্তু লাভবান করেছিল KKR কেও। কারণ তাদের আয় বিশাল বৃদ্ধি পেয়েছে। দুইবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নদের জন্য, আশ্চর্যজনক চুক্তিটি ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়েছে, এবং এর সাফল্যের উপর ভর করে, কেকেআরও এমন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির মধ্যে রয়েছে যাদের উপার্জন বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনকে দিন (Net Worth of KKR)।
আইপিএলের দলগুলোর আয়ের (Net Worth of KKR) অন্যতম আরেকটি উৎস হলো স্পনসরশিপ। তাদের আয়ের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আসে স্পন্সারশিপ থেকে। ২০০৮-১৪ এবং ২০১৮-১৯ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড Nokia কলকাতা-ভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশীদার ছিল এবং তারা ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স এর প্রধান স্পনসর। ফিনিশ কোম্পানির সাথে বিচ্ছেদের পরে, MPL-এর লোগোটি KKR-এর জার্সিতেও প্রদর্শিত হয়েছিল কারণ এটি দুইবারের আইপিএল বিজয়ী পক্ষের প্রধান স্পনসর হিসাবে Nokia-এর উত্তরসূরি হয়ে ওঠে। ২০২৩ সালে MyFab11 ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়ে ওঠে। পাশাপাশি আরো জনপ্রিয় স্পন্সর যেমন লাক্স কোজি, জয় পার্সোনাল কেয়ার, মানি 9, জিও, রয়্যাল গ্রীন এবং অ্যাকোও তাদের অফিসিয়াল স্পনসর হিসাবে নাইট রাইডার্সের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য অর্থ ছড়িয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজির কৃতিত্ব এবং জনপ্রিয়তা এর মালিকদের এই বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলির সাথে লোভনীয় ডিল ক্র্যাক করতে এবং স্পনসরশিপের সাথে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেতে সাহায্য করেছে৷
আরও পড়ুন ?IPL 2024 Champion KKR: মেন্টরশিপ নাকি অধিনায়কত্ব! ১০ বছর পর এই ১০ ম্যাজিকেই KKR-এর ঘরে উঠল কাপ!
ভারতের খেলার দুনিয়া আগের থেকে অনেক বেশি সম্প্রসারিত এবং উন্নত হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ক্রিকেট সামগ্রী এবং পোশাকের প্রতি ভারতের অনুরাগ আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি থেকে অনলাইন খুচরা স্টোর প্রতিষ্ঠার দিকে পরিচালিত করেছে। KKR তার ভক্তদের সাথে একটি দৃঢ় সংযোগ স্থাপনের জন্য ‘শপ কেকেআর’ ওয়েবসাইটও চালু করেছে। জার্সি, শর্টস, ক্যাপ, টি-শার্ট এবং কীচেনের মতো কেকেআর সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করছে ফ্রাঞ্চাইজির মালিকেরা। প্রতিবছর লিগের দুই মাসে তাদের বিক্রি বিশাল আকার ধারণ করে। এতে তাদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়াটাই স্বাভাবিক (Net Worth of KKR)। ২০৩০ সালে কেকেআরের অন্যতম মালিক এবং একজন বলিউড তারকা শাহরুখ খান, ভক্তদের সাথে তার দলের বিশেষ বন্ধনকে শক্তিশালী করার জন্য চালু করেছিলেন ‘নাইট ক্লাব অ্যাপ’। অ্যাপটি আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাচ্ছে। এই অ্যাপটির মাধ্যমে ভক্তরা নাইট রাইডার্সের সাথে সম্পর্কিত পণ্য কিনতে এবং দলের প্রতি তাদের ভালবাসা এবং সমর্থন প্রদর্শন করতে সহায়তা করে।
কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের প্রতি স্বাভাবিকভাবে কলকাতাবাসীর একটা আলাদা একটা আলাদা ইমোশন কাজ করবে। গত ১৫ বছর ধরে এই দলকে সমর্থন করার জন্য ইডেন গার্ডেনে ম্যাচ দেখার ভিড় বরাবরই লক্ষ্য করা যায়। কলকাতাবাসীর মধ্যে নাইট রাইডার্স এর ক্রেজ স্বাভাবিকভাবেই অনেকটা বেশি। ক্লাসিক্যাল হোম গ্রাউন্ড এর ম্যাচ হলে ভক্তদের উচ্ছ্বাস এবং সমর্থন দুটোই লাভ করে কেকেআর। এ বছর কেকেআরের পারফরমেন্স সত্যিই দুর্দান্ত ছিল। যার ফলে স্টেডিয়ামে টিকিট বিক্রির পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। কেকেআর টিকিট বিক্রির বিরাট একটা অংশ লাভ করে। পাশাপাশি আয়ের আরো একটি উপায় হল ফ্র্যাঞ্চাইজি গেট পাস। এটি তাদের সম্পত্তির পরিমাণকে আরও বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। মোট এর ওপর কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর যা সম্পত্তি রয়েছে তাতে মিচেল স্টার্কের মত ৩২ জন খেলোয়াড়কে তারা কিনলেও ভাড়ার টান পড়বে না।