নিজস্ব প্রতিবেদন : গত ২২ মে কলকাতা হাইকোর্টের একটি রায় ফের একবার রাজ্যে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। এবার কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছে তা হলো ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Certificate)। ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্ত নিয়ম সঠিকভাবে পালন না করার কারণে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট অবৈধ বলে ঘোষণা করে। এর ফলে প্রায় পাঁচ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়।
ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হওয়ার সেই ঘটনার রেস্ট কাটতে না কাটতেই এবার কলকাতা হাইকোর্টের আরও একটি রায় সামনে এলো। এই রায় এবার ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হওয়ার রায়কেও (Calcutta High Court Verdict) পিছনে ফেলে দিয়েছে। কেননা এই রায় এসসি সার্টিফিকেট (SC Certificate) নিয়ে। শুধু রায় দেওয়া নয়, পাশাপাশি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বেজায় চটেছেন বলেও জানা যাচ্ছে।
এসি অর্থাৎ তফশিলি জাতি সার্টিফিকেট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে সেই ঘটনা ঝাড়গ্রামের একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে। ১৯৯৭ সালে তফশিলি জাতি সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি জামবনী ব্লকের দুবড়া আদর্শ বিদ্যামন্দির উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়োগ পেয়েছিলেন সুতপা হাটৈ নামে এক মহিলা। তিনি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী পদে নিয়োগ হয়েছিলেন। তবে পরবর্তীতে তার সার্টিফিকেট নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয় এবং সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত হয়।
তৎকালীন স্কুল পরিচালন কমিটির তরফ থেকে নিয়োগ হওয়ার পর তপশিলি সার্টিফিকেট নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে ১৪ বছর কাজ করার পর সুতপা হাটোই চাকরি হারান। ২০১১ সালে সুতপার বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়গ্রামের তৎকালীন মহকুমা শাসক তার শংসাপত্র অবৈধ জানান এবং জুন মাস থেকে বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এর পাশাপাশি তাকে শো-কজ করা হয়। যদিও সুতপা সেই শোকজের উত্তর দেন নি।
অন্যদিকে শোকজের উত্তর না দিলেও নিজের তপশিলি জাতি শংসাপত্র বৈধ বলে দাবি করে সুতপা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে চলার পর অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ যত ২২ মে ওই মামলার রায় দেন। যদিও ওই রায় সুতপা হাটইয়ের বিরুদ্ধে গিয়েছে। অন্যদিকে সুতপা হাটই পুরো বিষয়টিকে চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন এবং ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে সুতপার বিপক্ষেই রায় দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি ১৪ বছর যেহেতু কাজ করেছিলেন তাই তার বেতন ফেরত দিতে হবে না। তবে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেননা ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করে সংরক্ষিত আসনে নিয়োগ পুরোপুরি অবৈধ।