নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের টেলিকম বাজারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেওয়া টেলিকম সংস্থাটি যে মুকেশ আম্বানির (Mukesh Ambani) জিও (Jio) তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। ভারতের মাটিতে 4G ও 5G পরিষেবা প্রদান করার পর এখন এই টেলিকম সংস্থা বিদেশের মাটিতে নিজেদের পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তবে বিদেশের মাটিতে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার আগেই ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে সংস্থাকে।
সম্প্রতি মুকেশ আম্বানি এশিয়া ও ভারতের সবচেয়ে ধনী শিল্পপতির তকমা হারিয়েছেন। তার জায়গা দখল করেছে গৌতম আদানি। আর এসবের মধ্যেই আবার বিদেশের মাটিতে টেলিকম পরিষেবা পৌঁছে দিতে গিয়ে যেভাবে নানান অভিযোগ তোলা হচ্ছে তাতেই মনে করা হচ্ছে খুব একটা ভালো সময় যাচ্ছে না এই শিল্পপতির। ঠিক কি হচ্ছে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির সঙ্গে?
ভারতের সস্তায় টেলিকম পরিষেবা দেওয়ার পর এখন মুকেশ আম্বানি আফ্রিকার ঘানায় 5G পরিষেবা স্থাপন করার জন্য লাইসেন্স পেয়েছেন। ভারতের একটি সংস্থা বিদেশের মাটিতে 5G পরিষেবা পৌঁছে দেবে তা ভারতীয়দের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। তবে ঘানা সরকারের বিপক্ষে যে সকল রাজনৈতিক দল রয়েছে তাদের মধ্যে বিরোধী দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক কংগ্রেস এই বিষয়ে আপত্তি তুলেছে।
আরও পড়ুন ? BSNL 997 Plan: Jio, Airtel কে টেক্কা! বাজার কাঁপাতে সস্তায় ১৬০ দিনের প্ল্যান নিয়ে এলো BSNL
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক কংগ্রেস শুধু আপত্তি তুলেছে তা নয়, এর পাশাপাশি এই চুক্তি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। তাদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, ঘানার সরকার এবং মুকেশ আম্বানির সংস্থা নিজেদের সুবিধা মত চুক্তি করেছে। তাদের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, ঘানা এখন ঋণের দায়ে জর্জরিত। এমন পরিস্থিতিতে উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের তহবিল প্রয়োজন। কিন্তু মুকেশ আম্বানির সঙ্গে তাদের সরকার 5G চালু করার জন্য যে চুক্তি করেছে তা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে।
এর পাশাপাশি আনুষ্ঠানিকভাবে নিলাম না করে জিওকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। যে পদ্ধতিতে জিওকে 5G পরিষেবা চালু করার জন্য সম্মতি দেওয়া হয়েছে সেই পদ্ধতিতে দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। তাদের দাবি, যদি আনুষ্ঠানিকভাবে নিলাম করা হতো তাহলে সরকারের আয় হতো অন্ততপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ কোটি ডলার। সেই জায়গায় মাত্র ১২ কোটি ৫০ লক্ষ ডলারে নেক্সট জেন ইনফ্রাকো নামে একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। এই সংস্থাকে আবার ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে এবং যার সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিসের রেডিসিস কর্প। আম্বানির সংস্থা ছাড়াও এই সংস্থায় যুক্ত রয়েছে নোকিয়া, টেক মাহিন্দ্রা, মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের মত সংস্থা। তবে ঘানার বিরোধীদলের তরফ থেকে এমন একাধিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরগরম হচ্ছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। আর এমন পরিস্থিতিতে আগামী দিনে কি হয় তাই দেখার বিষয়।
