In his spare time, the engineer grows miyazaki mangoes in his home garden: প্রত্যেকটা মানুষের আলাদা আলাদা শখ থাকে। কেউ ভালোবাসেন দামী দামী পোশাক কিনতে, কারোর বা পছন্দ নিত্যনতুন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক গেজেট। তবে ভারতের ওড়িশার বাসিন্দা, সুব্রত নাথ যিনি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার তার শখের কথা শুনলে আপনার চক্ষু চড়কগাছ হবার উপক্রম হবে। জানেন তিনি কি কিনতে সবথেকে বেশি পছন্দ করে? সুব্রতর কাছে শপিং মানেই হলো নার্সারিতে গিয়ে নিত্যনতুন গাছ কিনে নিয়ে আসা। এমনই একটি চারাগাছ বাড়িতে নিয়ে এসে এখন তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আসলে চারাগাছটি হল একটি আম গাছের (Miyazaki Mango) । আম গাছ তো সকলেই দেখেছেন কিন্তু তাতে অবাক হওয়ার মত কি এমন রয়েছে?
আমগাছটি তো সাধারণ কোন আমগাছ নয়, এটি হলো জাপানের মিয়াজাকি শহরে উৎপন্ন হওয়া বিশেষ এক প্রজাতির আম। তবে এই ধরনের আম গাছ নিয়ে বর্তমানে এই দেশেও বেশ চর্চা শুরু হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে অনেকেই এই আমের চাষ করছে। তবে আমটি (Miyazaki Mango) কিন্তু অন্যান্য আমের মতো সবুজ কিংবা হলুদ রঙের নয়। এর রং হল লালচে বেগুনি রঙের। জগৎবিখ্যাত আলফোনসোর নাম অনেকেই শুনেছে। কিন্তু তার থেকে এই আমটি অনেকটাই বেশি মিষ্টি, রসালো এবং বড়।
আমটি দেখতে অনেকটা বড়সড় ডিমের মতো, সেই কারণে এটি ‘সূর্যের ডিম’ নামেও পরিচিত। নার্সারি থেকে কিনে আনার পর সেই চারাগাছ (Miyazaki Mango) দুই বছরের মাথায় প্রায় ৯ ফুট লম্বা হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে সুব্রতর গাছে প্রথম আম হয়েছে এবং সব মিলিয়ে মোট আটটি আম হয়েছে তার গাছে। এই আম বিক্রি করলেই একেবারে তিনি লাখপতি হতে পারবেন। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও কথাটা কিন্তু একেবারে মিথ্যে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে মিয়াজাকি আমের মূল্য কেজি প্রতি আড়াই লাখ টাকা।
আরও পড়ুন ? Ration Card Latest Update: আমজনতার চিন্তা দূর করল কেন্দ্র, রেশন কার্ড নিয়ে এবার হয়ে গেল বড় ঘোষণা
আপনার মনে হতে পারে অন্যান্য যেকোনো আমের এত দাম নয় কিন্তু কি এমন বিশেষ জিনিস আছে যার জন্য এত বেশি দাম এই আমের। এদের হয়েছে বিশেষ ঔষধি গুণাবলী এবং গবেষণায় জানা গেছে, এই মিয়াজাকি আম (Miyazaki Mango) ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা শ্রেণির অন্তর্গত। মিয়াজাকি প্রজাতির আম ক্যানসার রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, প্রদাহ কমায়, সংক্রমণ সারায়। এটিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ইমিউনোমোডুলেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কেউ যদি এই আম নিয়মিত খায় তাহলে তার ক্যান্সার রোগ নিরাময় হতে পারে।
কিন্তু সুব্রত তার শখের বাগানে হওয়া আম কখনোই বিক্রি করতে যান না। তার বাগানে রয়েছে প্রায় ৪০০ মত গাছ, যা সত্যি বিরল এবং দুর্লভ। তার বাগানের আরও কিছু অদ্ভুত গাছ হল হাজার পাপড়ির পদ্ম, সাতরঙা আখগাছ বা হাইড্রেঞ্জার মতো বিরল সব উদ্ভিদ। পরম যত্নে তিনি তার বাগান সাজিয়ে তুলেছেন, কিন্তু সব থেকে আশ্চর্য বিষয় হলো ওড়িশার উষ্ণ জলবায়ুতে কীভাবে বেঁচে রয়েছে এইসব বিরল প্রজাতির গাছ-গাছালি। এইসব বিষয় নিয়ে সুব্রত রীতিমত পড়াশোনা করেছেন। প্রতিকূল আবহাওয়াতে এই ধরনের গাছ বাঁচিয়ে রাখায় তার কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। মিয়াজাকি আমের চারা গাছটির দাম ছিল প্রায় আড়াই হাজার টাকা। সুব্রত সেই চারা গাছে দিতেন গোবর, হাড়ের গুঁড়ো, সর্ষের খোল—এসব বিভিন্ন ধরনের সার। তবে রাসায়নিক সারের থেকে প্রাকৃতিক সারের ওপর তার বেশি ভরসা। বাগান করার শখ তার ছোটবেলা থেকেই যা বর্তমানে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। এই বাগানের পেছনে তার পরিশ্রম সত্যিই কম নয়। কোন কিছু প্যাশন হিসাবে দেখলে তার পেছনে অবশ্যই অনেকটা পরিশ্রম করতে হবে। গাছেদের পরিচর্যা করে তিনি সত্যিই খুব মজা পান। তার কাছে তার বাগানের গাছ গাছালি সবথেকে অমূল্য সম্পদ।