নিজস্ব প্রতিবেদন : বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। আসলে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এমন যে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। দুটি আলাদা আলাদা দেশ হলেও ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে যেতে পারে যদি বাংলাদেশ যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে হাত বাড়ায়।
এই সকল বিভিন্ন কারণেই ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ট্রেন (Rail Transit India Bangladesh) চালাতে চাইছে। ইতিমধ্যেই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়ে গিয়েছে এবং চুক্তি হয়েছে। যে চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রেল ট্রানজিট। তবে ভারত সরকার কোন যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে পারবে না, শুধুমাত্র পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর অনুমতি পেয়েছে। আর এই ট্রানজিট রেল পরিষেবা চালু হলেই দুই দেশেরই কিন্তু ব্যাপক লাভ।
প্রথমেই বলতে হয় ভারত সরকারের লাভের বিষয়টি। চিকেন নেককে এড়িয়ে ভারতীয় রেল খুব সহজেই উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে। এর ফলে ভারত সরকার এবং ভারতীয় রেলের পণ্যবাহী ট্রেন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই খরচ বেঁচে যাবে। শুধু খরচ বেঁচে যাওয়া নয়, পাশাপাশি বাঁচবে সময়ও। ভারত সরকার এবং ভারতীয় রেলের এই লাভ সরকারকে অনেকটাই শক্তিশালী করবে। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে রেল ট্রানজিট বিশ্বের সামনে নজির তৈরি করবে। এছাড়াও ভারত মায়ানমার আসিয়ানভুক্ত দেশে সহজেই পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।
এখন যদি বাংলাদেশের লাভের দিকে তাকানো যায় তাহলে বলতে হয়, ভারত সরকার ফকটিয়া বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ট্রেন চালাবে না। ভারত ও বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় রেল বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ট্রেন চালানোর জন্য বিপুল পরিমাণে অর্থ তাদের হাতে তুলে দেবে। অর্থের পরিমাণ ঠিক কতটা তা এখনই জানা না গেলেও সুত্র মারফত জানা যাচ্ছে, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে টন প্রতি প্রায় ৩০০ টাকা করে দেওয়া হবে। একবার ভেবে দেখুন, একটি পণ্যবাহী ট্রেনে কত টন পণ্য নিয়ে যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঝুলিতে কত কত টাকা আসবে তা আন্দাজ করা যেতে পারে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রেল ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও কিন্তু ভারত বাংলাদেশের সমস্ত রুটে অর্থাৎ যে কোন জায়গায় ট্রেন সরাসরি চালাতে পারবে না। বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মোট পাঁচটি রুটে ট্রেন চলাচল করে থাকে। যার মধ্যে তিনটি যাত্রীবাহী এবং দুটি হবে পণ্যবাহী। নিয়ম অনুযায়ী ভারতীয় ট্রেন সীমান্তে আসার পর বাংলাদেশের রেল ইঞ্জিন আসে এবং ট্রেনটি বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে নিয়ে যায়। এমনকি সেই সময় চালকও থাকেন বাংলাদেশের।