Those Key Factors for which Team India won the World Cup: ১১ বছর পর আবারো ভারত (Team India) বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আর যদি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বলা হয় তাহলে ১৭ বছর পর আবারও ক্রিকেটের অধরা মাধুরী এল ভারতের ক্যাবিনেটে। ২০১৩ সালের পর আমার ২০১৪ সালে এসে কোন আইসিসি ইভেন্টে ভারত সর্বোচ্চ সাফল্য পেলো। এর মাঝে ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে পাঁচটি ফাইনাল এবং চারটি সেমিফাইনালে হেরেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। এমনটা নয় যে এই নয়টি হার একই ক্যাপ্টেনের অধীনে একই দলের বিরুদ্ধে এসেছে। মহেন্দ্র সিং ধোনি থেকে বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা এই তিন ক্যাপ্টেন আলাদা আলাদা ছয়টি দলের বিরুদ্ধে এই হারের সম্মুখীন হয়েছে।
এইতো সেদিনের কথা ২০২৩ সালের ১৯ শে নভেম্বর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিশ্বকাপের ফাইনাল হারতে হয়েছে রোহিত শর্মার ভারতকে। তাইতো এদিনের এই জয় বাঁধনছাড়া উল্লাসে নাচিয়েছে গোটা ভারতকে। হারতে হারতে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা শ্রীলংকার প্রাপ্ত চোকার্স তকমাটা প্রায় এঁটেই গিয়েছিল ভারতের গায়ে। কিন্তু কিভাবে এলো এই জয়? এই জয় কোন একজন খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নয় টিম হিসাবে একত্রিত হয়ে জোটবদ্ধ পারফরম্যান্সেরই ফসল হচ্ছে রূপালী ট্রফিটি। শুধু কাপ জয়ই নয় এবারের ভারত শিরোপা জিতেছে অপরাজিত হিসাবে। যেটি স্বয়ং নিজে একটি রেকর্ড। এই জয় শুধু মাত্র একটি বিশ্বকাপ জয় নয়, এই জয় রোহিত, বিরাট, হার্দিক, পান্তদের জীবনের যুদ্ধজয়েরও গল্প। তবে এ জয় তো সহজে আসেনি। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই নানা উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে আসতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India)। এমনকি ফাইনালেও একটা সময় মনে হচ্ছিল যেন হেনরি ক্লাসেন আর ডেভিড মিলার বুঝি ম্যাচটা নিয়েই গেলো ভারতের হাত থেকে। কিন্তু কোন দাবার চালে এগিয়ে গেলো ভারত?
টিম অ্যাপ্রোচ (Team India)
পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই অ্যাটাকিং অ্যাপ রয়েছে ব্যাট করে গিয়েছে ভারত। কোন ইন্ডিভিজুয়াল ব্রিলিয়ানস নয় বরং ছোট ছোট ইম্প্যাক্ট ইনিংস দিয়েই টোটাল গড়েছে দল। অন্যান্য বারের মতো কোনো একজন ব্যাটসম্যানকে ডিপ ব্যাটিং করে অ্যাঙ্কার রোল প্লে করার থেকে অল অ্যাটাকিং মুডেই পাওয়া গিয়েছে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। যদিও ফাইনালে এসে পাওয়ারপ্লেতে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বিরাট খানিকটা ধরে খেললেও ৫০ পেরানোর পরেই আবার সেই খুনে মেজাজে পাওয়া গিয়েছে তাকে।
বোলিং লাইন আপ
যশপ্রীত বুমরাহ, অর্শদীপ সিং, মোহাম্মদ সিরাজ ও হার্দিক পাণ্ডিয়া কে তৈরি পেস অ্যাটাক এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা। আর বুমরাহ শুধু এই বিশ্বকাপই নয়, সাদা বলের ক্রিকেটের সর্ব কালের সেরাদের একজন। তার উপর রবীন্দ্র জাদেজা অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব তিন বিভাগের এই ত্রয়ী ছিলেন অনবদ্য।
গেম অ্যাওয়ারনেস
পরিস্থিতি অনুযায়ী মাঠের ভেতর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় দলের (Team India) জুড়ি মেলা ভার। যেমন ধরা যাক ফাইনালের কথা, অক্ষর প্যাটেলের ওভারে ক্লাসেন যখন উদোম প্যাদানি দিয়ে এক ওভারে ২৪ রান নিলেন তখন গেমের মোমেন্টাম স্লো করার জন্য উইকেটের পেছনে রিষব পান হাটু ধরে শুয়ে পড়লেন। ফিজিও ডেকে শুশ্রূষা করে আবার রেডি হতে সময় নিলেন প্রায় সাড়ে তিন মিনিট। ওখানেই তাল কাটে প্রোটিয়া ইনিংসের। তারপরেই আউট হয়ে যান ভয়ংকর ক্লাসেন।
সূর্য কুমার যাদবের ক্যাচ
যে বিশেষজ্ঞ যে মতই দিক না কেন, বর্তমান দিনের ক্রিকেটের তাও আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে শেষ ওভারে ছয় বলে ১৬ রান কোন পাহাড় সমান বাধা নয়, তাও আবার ডেভিড মিলারের মত ব্যাটসম্যানের কাছে। ২০তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কাটি হয়ে গেলে সেই মোমেন্টাম কাজে লাগিয়ে বাদবাকি পাঁচ বলে ২০ রান করা মিলারের জন্য খুব কঠিন হতো বলে মনে হয় না। কিন্তু সূর্য কুমার যাদবের লং অফ বাউন্ডারিতে ধরা সেই অতিমাণবীয় ক্যাচ বদলে দেয় বিশ্বকাপ ট্রফির ভবিষ্যৎ গন্তব্য।
ডেথ বোলিং
৩০ বলে ৩০ রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে ভারতীয় (Team India) তিন পেসার যে অভাবনীয় পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তা জন্য কোন প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। শুধু ডট বল দিয়ে রান বাঁচানোই নয় এর মধ্যে তারা তুলে নিয়েছেন ক্রিজে থাকা দুই সেট ব্যাটসম্যান সহ চার ব্যাটারকে।
বিরাটের অ্যাংকারিং
পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে যেখানে বিরাটের রান সংগ্রহ ৭৫ সেখানে বিশ্বকাপে ফাইনালেই তিনি করলেন ৭৬। মোটামুটি ভাবে ১২৯ এর কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাটিং করা ইনিংসটি যতই টি-টোয়েন্টি সুলভ না হোক, দিন শেষে বোর্ডে ১৭৬ রান তুলতে তার এই ইনিংসটি অত্যন্ত কার্যকারী ছিল।
ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা
ক্যাপ্টেন হিসাবে তিনি কতটা নিপুন তার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন আইপিএলে তার দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে পাঁচটি আইপিএল জিতিয়ে। তবুও ভারতীয় দলের হয়ে তেমন বৈশ্বিক সাফল্য না থাকাটা তার ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের প্রতি বেশ বেমানান ছিল। তবে পুরো বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট জুড়েই দূর্দান্ত ক্যাপ্টেন্সি করেছেন রোহিত শর্মা এবং ফাইনালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তার এক জলন্ত উদাহরণ হল, ট্র্যাপ করে ফাইন লেগ অঞ্চলে কুইন্টন ডি কককে আউট করা।