নিজস্ব প্রতিবেদন : স্কুলে পড়াশুনোর পাশাপাশি যাতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়ারা দুপুরে পেট পুরে খাওয়া দাওয়া করতে পারে তার জন্য মিড ডে মিলের (Mid Day Meal) ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। মূলত পড়ুয়াদের যাতে খালি পেটে পড়াশোনা করতে না হয় এবং তাদের পুষ্টি যাতে বজায় থাকে তার জন্য সরকারের তরফ থেকে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে।
মিড ডে মিলের খাবারের মেনুতে মূলত ভাত, ডিমের কারি, তরকারি, ডাল ইত্যাদিই থেকে থাকে। তবে মাঝে মাঝে কোন কোন স্কুলের একান্ত উদ্যোগে পড়ুয়াদের পাতে পড়তে দেখা যায় মাংস থেকে শুরু করে অন্যান্য লোভনীয় খাবার দাবার। ঠিক সেই রকমই এবার একটি স্কুলের চার পড়ুয়ার উদ্যোগে পড়ুয়ারাদের শেষ পাতে পড়ল লোভনীয় খাবার।
কারা এমন উদ্যোগ করল? কোন স্কুলে এমন উদ্যোগ হল চলুন আগে দেখে নেওয়া যাক। সোমবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হয় সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনে। ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ৪ জন ছাত্রীর গত জুন মাসে জন্মদিন ছিল। তাদের জন্মদিন উপলক্ষে নিজেদের টিফিন খরচ বাঁচিয়ে অন্যদের মুখে হাসি ফোটাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ওই চারজন ছাত্রীর মধ্যে তিনজন ছাত্রীর অভিভাবক রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তবে তাদের উদার মনোভাব এমন উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি।
ওই স্কুলে এমনিতেই তিথি ভোজনের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তিথি ভোজনের মূল উদ্দেশ্য হলো, শিক্ষক-শিক্ষিকার বিবাহবার্ষিকী, শিক্ষক-শিক্ষিকার সন্তানদের অথবা কোন পড়ুয়ার জন্মদিন উপলক্ষে রকমারি খাবারের আয়োজন করা হয়। এতদিন পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারাই এই সকল আয়োজন করে থাকতেন। তবে এবার ওই চার ছাত্রী নিজস্ব উদ্যোগে এমন তিথিভোজনের আয়োজন করে।
ওই চার ছাত্রী তাদের টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা জমা করে। এরপর সেই টাকা তুলে দেয় স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাতে। তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী সোমবার মিড ডে মিলের খাবারের শেষ পাতে স্কুলের পড়ুয়াদের দেওয়া হয় মিষ্টি। এদিন পড়ুয়াদের পাতে যে সকল খাবার পড়েছিল তা হল ভাত, ডাল, ডিমের কারি আর মিষ্টি। পড়ুয়াদের শেষ পাতে মিষ্টি পড়ার ফলে একদিকে যেমন পড়ুয়ারা খুশি, ঠিক সেই রকমই আবার উদ্যোগ নেওয়া চার ছাত্রী আনন্দে আত্মহারা, পাশাপাশি ওই চার ছাত্রের এমন উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের গর্বিত বোধ করছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।