নিজস্ব প্রতিবেদন : নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রথম বাজেট নিয়ে দেশের জনগণের বহু আশা ছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জনগণ খুশি হলেও অখুশি হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই। তবে পাওয়া না পাওয়ার মাঝে মোদি সরকার বিভিন্ন দেশের জন্য যে সহায়তার কথা ঘোষণা করেছেন তার সত্যিই প্রশংসনীয়। মালদ্বীপ (Maldives) এবং ভারতের দ্বন্দ্ব সম্পর্কে আশা করি সবাই জানে। কিন্তু চীনের দালাল মালদ্বীপকে আর্থিক সহায়তা করতে ভোলেনি ভারত। আসুন জেনে নিই বিস্তারিতভাবে।
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করা হয় গত মঙ্গলবার। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার সময় তুলে ধরেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো। তার মধ্যে অন্যতম হলো ভারত থেকে যে সমস্ত দেশ আর্থিক সহায়তা লাভ করে তাদের একটি তালিকা। ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান রয়েছে তালিকার একেবারে প্রথম স্থানে। মালদ্বীপের (Maldives) সঙ্গে ভারতের দ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও এই দেশটিকেও সহায়তা করেছে ভারত।
গত অর্থবছরে বিদেশ মন্ত্রকের জন্য বাজেটে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল তার থেকে এ বছর আরও অধিক টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য বিদেশ মন্ত্রকের (এমইএ) বাজেটের পরিমাণ ২২,১৫৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা করার কথা ঘোষণা করেছে ভারত। ২০২৩-২৪ সালের সংশোধিত হিসাব অনুযায়ী, ভারত সরকার বিদেশি সরকারগুলোকে ৬,৫৪১.৭৯ কোটি টাকা দিয়েছে। এটি ২০২৩-২৪ সালের জন্য ৫,৮৪৮.৫৮ কোটি টাকার বাজেটকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ধরা হয়েছে ৫,৬৬৭.৫৬ কোটি।
এই বছরের আর্থিক বাজেট অনুযায়ী সবথেকে বেশি সাহায্য পাচ্ছে ড্রাগনের দেশ ভুটান। প্রায় ২,০৬৮.৫৬ কোটি সাহায্য করা হবে ভুটানকে এমনটাই বাজেটে বলা হয়েছে। যা গত বছরের ২,৪০০ কোটি টাকার থেকে কম। ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষের সংশোধিত বাজেটে কিছুটা কম ব্যবহার দেখানো হয়েছে তা হলো প্রায় ২,৩৯৮.৯৭ কোটি টাকা।
মোদি সরকারের এই নতুন বাজেটে বাদ পড়েনি মালদ্বীপও (Maldives)। প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা করা হবে এই দেশটিকে। গত বছরেও ঠিক একই পরিমাণ আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল মালদ্বীপ। তবে ২০২৩-২০২৪ অর্থবর্ষের সংশোধিত বাজেটে ৭৭০.৯০ কোটি টাকা বেশি দেখানো হয়েছে।
ভারত থেকে যে দেশগুলো সহায়তা লাভ করেছে তাদের একটি তালিকা নিম্নে তৈরি করা হলো
- ভুটান: ২০৬৮.৫৬ কোটি টাকা
- নেপাল: ৭০০ কোটি
- মালদ্বীপ: ৪০০ কোটি টাকা
- মরিশাস: ৩৭০ কোটি ৪টি
- মায়ানমার: ২৫০ কোটি ৫
- শ্রীলঙ্কা: ২৪৫ কোটি ৬
- আফগানিস্তান: ২০০ কোটি
- ৭টি আফ্রিকান দেশসমূহ: ২০০ কোটি
- বাংলাদেশ: ১২০ কোটি রুপি
- সেশেলস: ৪০ কোটি
- লাতিন আমেরিকার দেশগুলি: ৩০ কোটি
ভুটানি হল ভারতের একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র যাকে সবথেকে বেশি সহায়তা করছে এই দেশ। চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নির্ধারণ করেছিলেন আর্থিক ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল জিডিপির ৪.৯ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ যে অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করা হয়েছিল তাতে ঘোষিত ৫.১ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।
প্রাথমিক রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থবর্ষে ছিল জিডিপির ৫.৯ শতাংশ, পরে অবশ্য সংশোধন করে এটি করা হয় ৫.৮ শতাংশ। সরকারের মোট রাজস্ব এবং মোট ব্যয়ের ব্যবধান কে চিহ্নিত করে রাজকোষের ঘাটতি। সরকারের নিয়ে ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা এভাবেই প্রকাশ পায়। সরকারের লক্ষ্য ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের মধ্যে রাজকোষ ঘাটতি জিডিপির ৪.৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা।