নিজস্ব প্রতিবেদন : দিঘার মতোই এবার বকখালির সমুদ্র সৈকতে ছড়ালো ইয়েলো বেলি সাপের আতঙ্ক (Yellow Bellied Snake Fare)। ভয়ংকর বিষধর এই সাপের আতঙ্ক বছর খানেক আগেই ছড়িয়েছিল দীঘায়। আর এবার নতুন করে এই সাপের আতঙ্ক বকখালিতে ছড়ানোর ফলে প্রশাসনের তরফ থেকে সতর্ক করার কাজ শুরু হয়েছে।
সামুদ্রিক এই সাপটির কাউকে কামড়ালে তার মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক বেশি থাকার কারণে আতঙ্ক অনেকটাই বেড়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার সকাল থেকে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা পর্যটক এবং সাধারণ বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার জন্য প্রচার শুরু করেছে। বকখালির সমুদ্র সৈকতে মূলত এমন বিষধর ইয়োলো বেলি সাপের গুঞ্জন ও আতঙ্ক ছড়ায় গত শনিবার থেকে।
জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুরবেলায় যখন বকখালীর সমুদ্রে জোয়ার আসে এবং পর্যটকরা হইহুল্লোড় করছিলেন ঠিক সেই সময় আচমকা ইয়েলো বেলি সাপ ভেসে আসতে দেখা যায়। প্রথমে এমন সাপটি দেখতে পান সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। সাপটিকে দেখা মাত্রই তারা পর্যটকদের তড়িঘড়ি সরিয়ে দেন। পরে ওই সাপটিকে উদ্ধার করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে এই বিষধর সাপের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়তেই রীতিমতো আতঙ্ক ছড়ায় পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে।
ইয়োলো বেলি সাপের বিজ্ঞানসম্মত নাম হল হাইড্রোফিস প্লাটুরাস। এমন সাপ আটলান্টিক মহাসাগর ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন গ্রীষ্মমন্ডলীয় সমুদ্রের জলে পাওয়া যায়। এই সাপের বিষে রয়েছে নিউরোটক্সিন এবং মায়োটক্সিন। যা কামড়ালে সরাসরি মানুষের মায়োগ্লোবিনুরিয়া, নিউরোমাসকুলার প্যারালাইসিস বা সরাসরি কিডনি ক্ষতির সাথে কঙ্কাল পেশীর ক্ষতি করে। জাতীয় বন্যজীব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর সদস্য দীনবন্ধু বিশ্বাস জানিয়েছেন, এই সাপ এই প্রথম দেখা গিয়েছে তা নয়। এর আগেও নামখানাতে এই ধরনের সাপ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এমনকি সামুদ্রিক বড় রিঠা মাছের পেট থেকেও বেরিয়েছে এই ধরনের সাপ। ১৫-১৬ বছর আগেও এই ধরনের সাপ দেখা গিয়েছে। তবে সামুদ্রিক সাপেদের কামড় দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে না বললেই চলে। এই সাপ আক্রমণাত্মক তো নয়ই, বরং লাজুক।
তবে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘বকখালিতে এই ধরনের কোন সাপ এর আগে দেখা গিয়েছে বলে তাদের মনে পড়ছে না। কিছুদিন আগে এইরকমই একটি সাপের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল দীঘায়।’ তবে সে যাই হোক, এখন এই সাপটিকে নিয়ে বকখালিতে আসা পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের চোখে মুখেও আতঙ্ক ধরা পড়ছে।