Hingalgaj Govt Launch: রাজ্যের চরম গাফিলতি! পড়েই নষ্ট হয়ে গেল ৪০ লক্ষ টাকার লঞ্চ। রাজ্যের এই ভাব লেষহীণ ক্রিয়াকলাপে ক্ষুব্ধ জনগণ। বিরোধীরা প্রায় সবাই এই ঘটনার জন্য সরকারের দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন। এক একটি লঞ্চ তৈরি করতে খরচ হয় প্রচুর পরিমাণ অর্থ। কিন্তু সেই লঞ্চ যখন ব্যবহার না করে শুধুমাত্র পড়ে থেকে নষ্ট হয়, তখন তা শুধু সরকারের আর্থিক ক্ষতি নয় ক্ষতি সাধারণ মানুষেরও। এক দিকে যখন নৌকোটি করে প্রাণ হাতে নিয়ে পারাপার করছেন সাধারণ মানুষ সেখানে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে ৪০ লক্ষ টাকার লঞ্চ (Hingalgaj Govt Launch)। যেটা ব্যবহার করলে হয়তো সাধারণ মানুষের কিছুটা হলেও উপকার হতে পারতো।
রাজ্যের এই গাফিলতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনাটি ঘটেছে হিঙ্গলগঞ্জে। লঞ্চটি ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল ২০১৯ সালে। হিঙ্গলগঞ্জের অন্তর্গত নেবুখালী এবং দুলদুলি জেটিঘাটের মধ্যে লঞ্চ (Hingalgaj Govt Launch) পরিষেবা চালু করতে চেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হয়েছিল এই লঞ্চটিকে। কিন্তু পেরিয়ে গেছে চারটে বছর। এখনো পর্যন্ত একদিনের জন্য ব্যবহার করা হয়নি লঞ্চটি। এমনটাই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হিঙ্গলগঞ্জের এই সমস্ত এলাকায় নদী পারাপার করার জন্য ব্যবহার করা হয় নৌকো। কিন্তু নৌকোতে করে নদী পারাপার করা স্বাভাবিকভাবেই একটু ঝুঁকিপূর্ণ। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থেই তৈরি করা হয়েছিল জেটিঘাট এবং লঞ্চটিকেও। কিন্তু তৈরি করা অব্দিই শেষ। তারপরে একদিনের জন্য কাজে লাগানো হয়নি লঞ্চটিকে।
এতদিন লঞ্চটি রাখা ছিল হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও অফিসের পাশে একটি খালে। সেখানে থাকতে থাকতেই নষ্ট হয়ে গেছে লাঞ্চটি। জোয়ার এলেই লঞ্চের অর্ধেক জলের তলায় ডুবে যায়। পলিজমে লঞ্চের ভিতরটা ভরে গেছে। বিভিন্ন জায়গা ভেঙে পড়ছে। কিন্তু কেনো? লঞ্চ (Hingalgaj Govt Launch) তৈরি করার পরও কেন ব্যবহার করা হলো না? তথ্য সূত্রে জানা গেছে লঞ্চটিকে চালানোর জন্য প্রয়োজন ছিল ভাসমান জেটিঘাট। দুলদুলিতে ভাসমান জেটিঘাট রয়েছে। কিন্তু নেবুখালিতে আজ পর্যন্ত ভাসমান জেটিঘাট তৈরি করা হয়নি। এই কারণেই লঞ্চটিকেও পারাপারের কাজে ব্যবহার করা যায়নি। এত দামি একটি লঞ্চ যখন নষ্ট হচ্ছে তখন নৌকাতে করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। স্বাভাবিকভাবেই সরকারের এই গাফিলতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন ? Foreign Job: বাবা-মাকে একা ছেড়ে যেতে নারাজ! দেড় কোটি টাকার বিদেশি চাকরি ছেড়ে দিলেন বাগুইআটির যুবক
লঞ্চটি (Hingalgaj Govt Launch) তৈরি করাতে শুধুমাত্র সরকারের আর্থিক ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হয়নি। সাধারণের সুবিধার্থে তৈরি করা এই লঞ্চ সাধারণের উপকারে আসেনি একদিনও। হিঙ্গলগঞ্জের পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকা দুলদুলি, নেবুখালী, সাহেবখালি, কালিতলা, গোবিন্দকাটি এই সমস্ত জায়গার লোকেরা প্রতিদিন নদী পারাপার করেন। সাহেবখালি নদী পেরিয়ে তাদের যেতে হয় নিত্যদিনের কাজের জন্য। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই এলাকায় নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম হলো নৌকা। তাই জন্য নৌকাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে হয় তাদের। শুধু অতিরিক্ত যাত্রী নয়, তার সাথে সাইকেল, মোটর বাইক আরো কত কিছু বোঝাই করে নিয়ে নৌকো পারাপার করা হয়। লঞ্চ থাকা সত্ত্বেও কেন এভাবে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হবে সাধারণ মানুষকে? লঞ্চ পরিষেবা চালু হলে মানুষের জীবনের প্রতিনিয়ত এই ঝুঁকির সম্ভাবনা অনেকটাই মিটে যেত।
সরকারের গাফিলতির এ এক নির্মম নিদর্শন। লঞ্চটি (Hingalgaj Govt Launch) নষ্ট হয়ে যাবার পর বিরোধিরা তীব্রভাবে নিন্দা করেছেন তৃণমূল সরকারের। তাদের মতে সরকারি সম্পতি নষ্ট হোক আর কাজে লাগুক তাতে কিছুই যায় আসে না তৃণমূলের। এই লঞ্চটি চালু হলে সুন্দরবনের মানুষদের জন্য যাতায়াত অনেকটাই সুবিধাজনক হতো। কিন্তু মানুষদের নিয়ে কোন চিন্তা ভাবনাই নেই সরকারের। তাই জন্যেই লঞ্চটি চালু করার ব্যাপারেও আজও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। হিঙ্গলগঞ্জের পঞ্চায়েত সভাপতি নিজেও স্বীকার করেছেন লঞ্চটির ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে। তবে এই পরিস্থিতিতেও হিঙ্গলগঞ্জের বিডিওর মুখে শোনা গেছে এক অবিশ্বাস্য কথা। তিনি বলছেন লঞ্চটি যেহেতু আমার সময় আসেনি তাই আমি এই লঞ্চ সম্বন্ধে কিছুই জানিনা। বিষয়টি বড্ড উপহাস যোগ্য বলে মনে হয়েছে বিরোধীদের।