নিজস্ব প্রতিবেদন : বঙ্গ রাজনীতিতে একজন সৎ শুধু মানুষ হিসাবে সব সময় যিনি পরিচিত ছিলেন তিনি হলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। তার সাদা জামায় কোথাও কালো দাগ নেই তা এককথায় স্বীকার করে নিতে দেখা যায় রাজ্যের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তাবড় তাবড় রাজনীতিকদের। এমন একজন জনপ্রিয় রাজনীতিককে ৮ আগস্ট ২০২৪ হারালো গোটা দেশ।
সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভ্রাতুষ্পুত্র বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন। তার সিদ্ধান্ত সঠিক থাকলেও পদ্ধতি সঠিক না থাকার কারণেই তাকে সিংহাসন হারাতে হয়েছিল বলে দাবি করছেন অনেকেই। এমন একজন রাজনীতিক কেবল রাজনীতিতেই পছন্দ করতেন তা নয়। পছন্দ করতেন ক্রিকেট, জমিয়ে খেলতেনও। কবাডি খেলতেও তিনি বেশ পছন্দ করতেন। কিন্তু বিশেষ কারণে তাকে ক্রিকেট ছাড়তে হয়েছিল।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছাত্র জীবন থেকেই সময় সুযোগ পেলেই ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকতেন। তাকে খোঁজখবর রাখতে দেখা যেত ক্রিকেটের টুকিটাকির। যদিও পরবর্তীতে সময়ের অভাব এবং রাজনীতিতে অতি সক্রিয় হয়ে ওঠার কারণে সেই খোঁজখবর নেওয়া কমে গিয়েছিল। ক্রিকেট নিয়ে তিনি এতটাই মগ্ন ছিলেন যে তার সঙ্গে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সখ্যতার মূল কারণই হয়ে উঠেছিল ক্রিকেট। এই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যই বঙ্গ ক্রিকেটকে অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন।
বঙ্গ ক্রিকেটকে অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রকাশ্যেই সিএবি নির্বাচনে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার সঙ্গে। তিনি ক্রিকেটের আঙ্গিনাকেও পরিচ্ছন্ন প্রশাসকের দ্বারা পরিচালনা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এমন একজন ক্রিকেটপ্রেমী রাজনীতিক নিজের শারীরিক সমস্যার কারণে ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন। মূলত তার চোখের সমস্যা থাকায় ক্রিকেট খেলতেন না।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর একইভাবে স্বপ্ন দেখেছিলেন সিঙ্গুরে টাটা ন্যানোর কারখানা তৈরি করার। কিন্তু সিঙ্গুরের চাষযোগ্য জমিতে ১০০০ একর জায়গায় কারখানা তৈরি হওয়া নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছিল। ধীরে ধীরে ধিক ধিক করে আগুন জ্বলতে জ্বলতে সেই সংশয় বড় বিক্ষোভের আকার নেই। সিঙ্গুরের সেই বিক্ষোভ, সিঙ্গুরের সেই আন্দোলনই মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ও বাম জামানার বিদায় ঘন্টা বাজিয়েছিল। তবে আজ এমন একজন রাজনীতিককে হারিয়ে বামেদের পাশাপাশি রাজ্যের মানুষেরা কোথায় যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়লেন।