নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ থাকার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার প্রাণ হারান রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর তার শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী হয় চক্ষুদান থেকে শুরু করে দেহ দান। আর তার চক্ষুদানের পরিপ্রেক্ষিতেই দৃষ্টি ফিরে পেলেন দুজন, যারা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের চোখেই এবার দুনিয়া দেখবেন।
বয়সজনিত কারণে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। কিন্তু তিনি নিয়মিত নিজের চোখের চিকিৎসা করিয়েছিলেন। যে কারণে তার চোখের কর্নিয়া ভালো ছিল এবং চোখের কর্নিয়া ভালো থাকার কারণে কোনরকম অস্ত্রোপচার করতে হয়নি। চোখের নিয়মিত চিকিৎসা করানো এবং চোখের কর্নিয়া ভালো থাকার কারণে তার চোখের কর্নিয়া প্রতিস্থাপনযোগ্য ছিল বলেই জানিয়েছেন আরআইও অর্থাৎ রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি।
চক্ষু প্রতিস্থাপনের আগে আরআইও এই অপারেশন নিয়ে কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রথম থেকে সংশয় ছিল। যে কারণে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর তার চক্ষু দান হলেও তা প্রতিস্থাপনের যোগ্য কিনা তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়। মূলত বয়সজনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণে চোখে জল জমার পাশাপাশি দৃষ্টি শক্তি কমে আসে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রেও অনেকটা তেমনই হয়েছিল। তবে যেহেতু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিয়মিত চোখের চিকিৎসা করাতেন তাই তার কর্নিয়া দুটি দুজনের চোখে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দুটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর জানা যায়, রেটিনা দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কর্নিয়া দুটি প্রতিস্থাপনযোগ্য। এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে একজনের চোখে সেই কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয় এবং শুক্রবার সকালে আরেকজনের চোখে আরেকটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চক্ষু চিকিৎসক গৌতম ভাদুড়ির কাছে চোখের চিকিৎসা করাতেন, যখন তিনি আরআইও-র অধিকর্তা ছিলেন। সরকারি উৎকর্ষ কেন্দ্রে নিজের চোখের চিকিৎসা করাতেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
সফলভাবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দুটি কর্নিয়া দুজনের চোখে প্রতিস্থাপনের পর আরআইওর চিকিৎসকেরা আশাবাদী নতুন করে দুজন তাদের দৃষ্টি শক্তি ফিরে পাবেন। যে দুজন কর্নিয়াজনিত রোগে ভুক্তভোগী এবং নিজেদের দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছিলেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের চক্ষুদানের ফলে ওই দুজন ব্যক্তিও নিজেদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।