Violet Potato: পশ্চিমবঙ্গের কৃষিক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটেছে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন এক বিশেষ ধরনের বেগুনি রঙের আলু (Violet Potato), যার পোশাকি নাম ‘কুফরি ভাস্কর’ ও ‘কুফরি নীলকন্ঠ’। সাধারণ সাদা আলুর পরিবর্তে এই বেগুনি আলু যেন প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার, যা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষত, এই আলু সুগার ও ক্যানসারের মতো মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকরী প্রমাণিত হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান, হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলায় সাদা আলুর ব্যাপক চাষ হলেও, কৃষকেরা তাতে তেমন লাভ করতে পারেন না। চাষের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে সাদা আলুর দাম পড়ে যায়, ফলে কৃষকের আয়ও কমে যায়। এই অবস্থায় বেগুনি আলু এক নতুন সম্ভাবনা হয়ে উঠেছে। সাদা আলুর তুলনায় বেগুনি আলুতে (Violet Potato) রয়েছে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ, যেমন ক্যারোটিন, আয়রন, জিংক এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এগুলি আমাদের শরীরকে শক্তিশালী রাখার পাশাপাশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আলু নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে সুগার ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যেতে পারে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ‘কুফরি নীলকন্ঠ’ আলুর প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ৮৩ গ্রাম অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা আমাদের শরীরে আয়রন ও জিংকের অভাব পূরণ করতে সক্ষম। যেখানে সাধারণ সাদা আলুর চাষে প্রতি হেক্টরে ২৭ থেকে ৩২ টন ফলন পাওয়া যায়, সেখানে এই বেগুনি আলু (Violet Potato) প্রতি হেক্টরে ৩৮ টন পর্যন্ত ফলন দেয়। এটি শুধুমাত্র কৃষকদের আয় বাড়াবে না, বরং বাংলার অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।
আরও পড়ুন : Ilish Price: ভারতকে না দেওয়ার সিদ্ধান্তে মাথা ঠুকছেন ব্যবসায়ীরা, তলানিতে পদ্মার ইলিশের দাম
এখনই সময়, বাংলার কৃষকদের জন্য নতুন আশা নিয়ে বেগুনি আলুর (Violet Potato) চাষ শুরু করার। ইতিমধ্যে বাংলার পাঁচতারা হোটেলগুলোতে এই আলুর চাহিদা আকাশছোঁয়া হয়ে উঠেছে। রঙিন আলুর ব্যবহার যদি আরও বাড়ানো যায়, তবে তা বাংলার কৃষিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
এই আলু শুধুমাত্র কৃষকদের জন্য নয়, বরং সারা বাংলার মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য, সাফল্য, এবং নতুন সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে আসতে পারে। বাংলার কৃষি, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির উন্নতির জন্য বেগুনি আলু হতে পারে এক নতুন দিশারী। এবার বাংলার মাটিতে বেগুনি আলু চাষ করেই সাদা আলুকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পালা!