RG Kar Hospital: বিলেত ফেরৎ ডাঃ আরজি কর ভিক্ষে করে গড়েছিলেন আরজি কর হাসপাতাল, আজ চলছে তাণ্ডব

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

কলকাতা : আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital) দ্বিতীয় বর্ষে পাঠরত মহিলা চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গোটা রাজ্য আজ উত্তাল। যে ঘটনায় প্রতিবাদে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ‘মেয়েদের রাত দখলে’র মত প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যেই আচমকা আর জি কর হাসপাতালে হামলা চালাতে দেখা যায় একদল দুষ্কৃতীদের। ইমারজেন্সি বিভাগের বিভিন্ন জিনিসপত্র ভেঙ্গে দেওয়ার পাশাপাশি আন্দোলনরত চিকিৎসকদের অস্থায়ী মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়। তবে এইসব জিনিসপত্র ভেঙ্গে যাওয়ার আগে এই হাসপাতাল কিভাবে তৈরি হয়েছিল সেই ইতিহাস কি কারো জানা আছে? অধিকাংশেরই জানা নেই।

Advertisements

হাসপাতাল মানেই সেখানে জীবন ফিরে পেতে মুমূর্ষু রোগীদের আগমন হয়। তাদের অনেকেই রয়েছেন যারা জীবন ফিরে বাড়ি ফেরেন, আবার অনেকেই রয়েছেন যারা ফিরতে পারেন না। তবে হাজার হাজার এমন রোগীদের কথা মাথায় রেখেই ডাঃ আরজি কর ভিক্ষে করে আরজি কর হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন। তার দরকার ছিল না এইরকম একটি হাসপাতাল তৈরি করার। কেননা তিনি ছিলেন একজন বিলেত ফেরত চিকিৎসক, তিনি ভিক্ষে করে এমন হাসপাতাল তৈরি না করে নিজের জীবন বেশ স্বাচ্ছন্দেই কাটিয়ে দিতে পারতেন।

Advertisements

ডাঃ আরজি কর, যার পুরো নাম রাধাগোবিন্দ কর। রাধা গোবিন্দ করকে আরজি কর হাসপাতাল তৈরি করার ক্ষেত্রে আরেক চিকিৎসক তার বন্ধু শৈলেন গুপ্ত অনেক সাহায্য করেছিলেন। তিনিও রাধা গোবিন্দের মত ভিক্ষে করেছিলেন হাসপাতালের জন্য। বড়লোকদের বিয়ে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তারা দুজনে হাত পেতে অতিথিদের থেকে হাসপাতাল তৈরির জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯০৪ কিংবা ১৯০৫ সালে এইভাবে ভিক্ষুকের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অর্থ সংগ্রহ করে আরজি কর হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা হয়।

Advertisements

আরও পড়ুন : বাজারে আসছে সস্তার 5G ফোন, আনছে Jio

চিকিৎসক আরজি কর জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৫০ সালের ২৩ আগস্ট। তিনি হাওড়া জেলার রামরাজাতলা স্টেশন থেকে সামান্য দূরে বেতড়ের বাসিন্দা। তার বাবা ছিলেন দুর্গাদাস কর। তিনিও একজন কৃতি পুরুষ ছিলেন এবং চিকিৎসা শাস্ত্রের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। তিনি ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভার্নাকুলার বিভাগের একজন অধ্যাপক। বাংলা ভাষায় তিনি চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে বেশ কিছু বই লিখেছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি ঢাকায় মিসফোর্ড নামে একটি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

রাধাগোবিন্দ কর প্রথমে কলকাতার হেয়ার স্কুল এবং পরে হিন্দু স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। তার বাবার স্বপ্ন ছিল তিনি যেন একজন ডাক্তার হন। সেই মতো তাকে তার বাবা কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসিয়েছিলেন। সেখান থেকে পরীক্ষায় পাশ করে ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন রাধাগোবিন্দ কর। এরই মধ্যে রাধাগোবিন্দের বিয়েও হয় এবং তার স্ত্রী মারাও যান। মাঝে তিনি আবার থিয়েটারের নেশায় ডাক্তারি পড়াশোনা তুলে ফেলেছিলেন। পরে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্রায় দশ বছর পর আবার ডাক্তারি পড়া শুরু করেন এবং তিন বছর পর ডাক্তারি পাস করে স্কটল্যান্ডে পাড়ি দেন। সেখান থেকে ডাক্তারিতে ডিপ্লোমা করে দেশে ফিরে দেশের মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি যেভাবে তার প্রচেষ্টায় ধাপে ধাপে আরজি কর হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন তার ইতিহাস অনেক বড়। প্রথমদিকে এই হাসপাতালের নাম একাধিকবার আলাদা আলাদা রাখার পর ১৯৪৮ সালে আরজি কর হাসপাতাল নাম পেয়েছিল।

Advertisements