Indian Railway: এক অজানা রহস্যের মোড়কে পাঁচ বছর ধরে পাকিস্তানে আটকে রয়েছে ভারতীয় রেলের (Indian Railway) ১১টি কামরা। ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট, শেষবারের মতো চলেছিল সমঝোতা এক্সপ্রেস, যার পর থেকে আর কোনো দিনও এই ট্রেনটি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ফিরতে পারেনি। ভারত সরকার যখন সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করেছিল, তখনই শুরু হয়েছিল এই রহস্যময় কাহিনির যাত্রা। পাকিস্তান সেই সময়ই সমঝোতা এক্সপ্রেসের সেবাটি বন্ধ করে দেয়, আর সেই সঙ্গে আটকে ফেলে ভারতীয় রেলের কামরাগুলিকে। সেগুলি আজও লাহোরের এক নিঃঝুম স্টেশনে পড়ে রয়েছে।
সমঝোতা এক্সপ্রেস চালু হওয়ার সময় দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, ট্রেনের বগি পালাক্রমে চলাচল করত—পাকিস্তানি কামরা জানুয়ারি থেকে জুন, আর ভারতীয় কামরা জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট, ভারত যখন কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করল, পাকিস্তান সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তৎক্ষণাৎ সমঝোতা এক্সপ্রেস বন্ধ করে দেয়। যদিও প্রথমে তারা এক দিনের জন্য বাতিলের ঘোষণা করেছিল, পরে ট্রেনটি চিরতরে থেমে যায়। এর ফলস্বরূপ, ভারতীয় রেলের (Indian Railway) ১১টি কামরা পাকাপাকিভাবে বন্দী হয়ে যায় পাকিস্তানের ওয়াঘা স্টেশনে।
১৯৭৬ সালে চালু হওয়া সমঝোতা এক্সপ্রেস একসময় ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের একটি প্রতীক ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সম্পর্কের অবনতি ঘটলে, ট্রেনটির (Indian Railway) চলাচলও বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এই ট্রেনটিতে ছয়টি স্লিপার ক্লাস কামরা এবং একটি এয়ার কন্ডিশনড কামরা ছিল, যা ভারত-পাকিস্তান সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করত। বহুবার ভারত সরকার পাকিস্তানকে কামরাগুলি ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেছে, কিন্তু সেই অনুরোধ পাকিস্তানের কানে পৌঁছায়নি।
আরও পড়ুন : Train Wheel: লোহা-ইস্পাত দিয়ে তৈরি বড় বড় ট্রেনের চাকার পরমায়ু নামমাত্র, চলে মাত্র কয়েক বছর
পাঁচ বছর ধরে আটকে থাকা এই কামরাগুলি নিয়ে নানা রকমের গুজবও ছড়িয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলি ফেরত দিচ্ছে না কূটনৈতিক চাপ তৈরির উদ্দেশ্যে। আবার অনেকে মনে করছেন, পাকিস্তান এই কামরাগুলির প্রতীকী গুরুত্ব বুঝতে পেরেই সেগুলিকে আটকে রেখেছে। তবে, ভারতীয় জনগণের মনে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে—কবে ফিরবে এই কামরাগুলি?
এ যেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত। ভারতীয় রেলের ওই কামরাগুলি লাহোরে পড়ে থাকলেও, কবে সেগুলি দেশে ফিরবে তা অজানা। এমনকি এই রহস্যময় বন্দিত্বের পেছনে পাকিস্তানের আসল উদ্দেশ্য কী, সেটাও অন্ধকারে। একদিকে সময়ের স্রোতে বহু কিছু বদলালেও, বদলায়নি সেই কামরাগুলির নিয়তি—সেগুলি এখনও পাকিস্তানের মাটিতে বন্দী।