নিজস্ব প্রতিবেদন : তাদের প্রিয় শিক্ষক বদলি নিয়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছেন। প্রিয় শিক্ষকের এইভাবে চলে যাওয়া কোনভাবেই পড়ুয়ারা মেনে নিতে পারছেন না। শুধু পড়ুয়ারা নয়, পাশাপাশি মেনে নিতে পারছেন না অভিভাবকরাও। এমন পরিস্থিতিতে পড়ুয়ারা শিক্ষককে চিঠি দিয়েও যখন কাজ হয়নি তখন তাকে আটকাতে শুরু হয় অঝোরে কান্না। তবে এই কান্নাও ঐ শিক্ষকের বদলি আটকাতে পারবে কিনা তা নিয়ে এখনো কোনো উত্তর মেলেনি।
শিক্ষককে ধরে শিক্ষকের বদলি আটকাতে এমন অঝোরে কান্নার ঘটনাটি বুধবার ঘটেছে বীরভূমে (Birbhum News)। বীরভূমের সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কোমা গ্রাম পঞ্চায়েতের জানুরি গ্রামে থাকা জানুরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এদিন এমন ঘটনার সাক্ষী থাকে গোটা স্কুল, গোটা গ্রাম। ওই স্কুলের শিক্ষক নন্দদুলাল মন্ডলের বদলিকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনার সূত্রপাত। শুধু পড়ুয়ারা নয়, যেদিন ওই শিক্ষকের অন্য স্কুলে চলে যাওয়া আটকাতে রীতিমতো হাজির হন অভিভাবকরাও।
শিক্ষক নন্দদুলাল মন্ডল জানিয়েছেন, “প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে তাকে ডেপুটেশনে পাঠানো হচ্ছে অবিনাশপুরের মাইপুর গ্রামে থাকার স্কুলে। তিন মাসের জন্য তাকে ওই স্কুলে যেতে হবে নির্দেশ অনুযায়ী। কিন্তু তার এমন বদলীর খবর ছড়িয়ে পড়তেই বুধবার পড়ুয়ারা তাকে একটি চিঠি দেয় আর সেই চিঠিতে লিখে ‘স্যার আমাদের ছেড়ে যেও না’। কিন্তু উপায় নেই, সমস্ত আবেগকে দূরে সরিয়েও আমাকে নির্দেশ অনুযায়ী যেতেই হবে।”
অন্যদিকে পড়ুয়াদের পাশাপাশি অভিভাবকরা জানিয়েছেন, নন্দদুলাল স্যার পড়ুয়াদের ছেলে মেয়ের মতো ভালোবাসেন। তাদের সব সময় খোঁজ খবর নেন। পড়াশুনোর দিক দিয়ে তুলনা হবে না। এসব কারণেই তারা এমন একজন শিক্ষককে কোনভাবেই ছেড়ে দিতে চাইছেন না। তারা যে করেই হোক ওই স্কুলের শিক্ষকের বদলি আটকাবেন।
জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষকের কাছে মঙ্গলবারই এমন ডেপুটেশনে পাঠানোর চিঠি আসে। চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার তাকে ওই মাইপুরে স্কুলে চলে যেতে হবে। নির্দেশ পাওয়ার পর তারও মন খারাপ বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে নির্দেশ মানতেই হবে। অন্যদিকে ওই স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, স্যারের বদলি আটকাতে তারা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে ডেপুটেশন দেবেন। তবে হাতে কম সময় থাকার কারণে ওই শিক্ষকের বদলি আটকানোর ক্ষেত্রে কতটা সফল হবেন পড়ুয়ারা এবং তাদের অভিভাবকরা তা নিয়েই এখন উঠছে প্রশ্ন।