Public Sector Banks: অনেক সময় লক্ষ্য করা কাছে যে, বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহক-ক্রেতাকে ঠকানোর চেষ্টা করে। এমনকি বিজ্ঞাপনে ভুলিয়ে কিংবা ভুল বুঝিয়ে তারা বাড়তি মুনাফা আদায় করার চেষ্টা করে। এই অভিযোগ সবার ক্ষেত্রে কার্যকর না হলেও অনেক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই লক্ষ্য করা যায়। এই ধরনের কান্ডের জন্য বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আইনি ঝামেলায় জড়াতে হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা মানুষের ভরসার অন্যতম জায়গা, সাধারণ মানুষ চোখ বন্ধ করে এই ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগ এবং সঞ্চয় করে থাকে। কিন্তু তারা যদি গ্রাহকের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করে, তাহলে সাধারণ মানুষ ভরসা করবে কোন প্রতিষ্ঠানের উপর?
এমন একটি ঘটনা সম্প্রতি সামনে এসেছে যাতে দেখা গেছে গ্রাহকের অজান্তেই, সরকারি বিমার গ্রাহক বানিয়ে সেই গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রিমিয়ামের টাকা কেটে নিয়েছে নামকরা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক (Public Sector Banks)। বিষয়টি সামনে আসায় প্রতিবাদ করা হয়েছে কিন্তু অস্বীকার করেছে সেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। যখনই আইনি পথে হাঁটার কথা বলা হয় সেই সময় কেটে নেওয়া টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়া হয়। শুধু একটি ব্যাঙ্ক নয়, আরো কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে এরকমই অভিযোগ সামনে এসেছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার সরকারি বিমাগুলির বিক্রি বাড়ানোর জন্য রীতিমতো চাপ দিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলিকে। বেআইনি হলেও বিভিন্ন ব্যাংকগুলো এই পথেই হাঁটছে আজকাল।
বেশিরভাগ গ্রাহক বর্তমানে এই বিষয়ে সজাগ এবং সচেতন কোনটাই নয়। আবার অনেক সময় প্রিমিয়াম অল্প থাকার জন্য গ্রাহকরা ভালো করে খেয়াল করে দেখেন না। এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি (Public Sector Banks)। এই সুযোগে তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা কেটে নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে গ্রাহকের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। অ্যাপ, নেট ব্যাঙ্কিং ও প্রথাগত পাস বই আপডেট করে আপনার অ্যাকাউন্টের আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখুন। ব্যাংক এবং গ্রাহকের সম্পর্ক চোর পুলিশের নয় তাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আরো বেশি সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকে।
আরো পড়ুন: একটি দুটি নয়, এবার চার চারটি ব্যাঙ্কের উপর অ্যাকশন নিলো রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া
গ্রাহক যদি কোন কারনে ক্ষিপ্ত হয় তাতে আখেরে লোকশান হবে সেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরই। সাধারণ মানুষরা তাদের কষ্ট করে উপার্জিত টাকা বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সঞ্চয় করে থাকে। কিন্তু যদি সেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর আস্থা না রাখতে পারে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় ‘লালবাতি’ জ্বলতে পারে। গ্রাহকের বিশ্বাস ছাড়া কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান চলতে পারেনা। সরকারি এবং বেসরকারি সমস্ত ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল কাজ হল গ্রাহকের অর্থকে সঞ্চয় করে রাখা সুরক্ষিতভাবে এবং পাশাপাশি নানা রকম পরিষেবা দিয়ে গ্রাহককে সন্তুষ্ট করা। এর কোনটাই যদি সঠিকভাবে না করা হয় তাহলে বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিমেষে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
কোন একসময় ভারতীয় পোস্ট অফিসে মানুষ অর্থ সঞ্চয় করতো এবং সেটি ছিল মানুষের অন্যতম ভরসার জায়গা। তবে পোস্ট অফিসের দুর্বল পরিষেবা এবং এজেন্ট-কর্মীদের দুর্নীতির কারণে আজকে এই অবস্থা। এর থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির শিক্ষা নিতে হবে। তবে এখন সকলের মধ্যে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। বিশ্বাসযোগ্যতাই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অন্যতম অস্ত্র। সেটাও যদি একাধিক কারণে ধাক্কা খায়, তাহলে ভবিষ্যৎ নিয়ে অবশ্যই চিন্তিত হতে হবে। গ্রাহকদের এখন থেকেই এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।