বাংলাএক্সপি ডেস্কঃ বন্যায় ভাসছে বাংলাদেশের (Flood in Bangladesh) পূর্বাঞ্চল। হঠাৎ বন্যায় সেদেশের বহু মানুষ এখন গৃহহীন হয়ে পড়েছেন এবং তারা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন। পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে গিয়েছে যে নোয়াপাড়ার যে সকল আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে সেগুলিতেও জায়গা হচ্ছে না। আর এমন পরিস্থিতিতে বন্যার জন্য ভারতকেই দায়ী করলো বাংলাদেশ। শুধু দায়ী করা নয়, পাশাপাশি ভারতকে ‘অমানবিক’ বলে তোপ দেগেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে অমানবিক বলার কারণ হিসাবে যে যুক্তি দিয়েছেন ওই দেশের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, তাহলো ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দেওয়া। ত্রিপুরায় অবস্থিত এই বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয় আর তাদের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বাঁধ থেকে জল ছাড়ার কারণেই এমন বন্যা হয়েছে তাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে। প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম আর ওই সকল গ্রামের মানুষেরা এখন গৃহ ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম দাবি করেছেন, কোনরকম সতর্কতা জারি না করেই ত্রিপুরার ওই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দেওয়া হয় এবং তারপরেই পরিস্থিতি বিগড়ে যায়। বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়ারাও ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে। তাদের অন্তবর্তী সরকার অভিযোগ করছে, ভারতের উঁচু জায়গা থেকে জল ছেড়ে দেওয়ার কারণেই সেই জল বাংলাদেশে পৌঁছে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে ভারত।
তবে বাংলাদেশের তরফ থেকে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে সেই অভিযোগ কি সত্যি? সত্যিই কি বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির এমন অবনতি হওয়ার পিছনে বাঁধ খুলে দেওয়া থেকে শুরু করে ভারতের উঁচু এলাকার জল দায়ী? এই বিষয় নিয়েই এবার মুখ খুলেছে দিল্লি। ভারতের বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, বাংলাদেশে যা প্রচার হচ্ছে তা একেবারেই সত্যি নয়। এর পিছনে যুক্তি দিয়ে বোঝানো হয়েছে পুরো বিষয়টি।
ভারতের বিদেশমন্ত্রকের দাবি, ‘এমনিতেই গত কয়েক দিন ধরে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে। গোমতী নদী সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে জলস্তর অনেক বেড়ে গিয়েছে। আর যে বাঁধকে নিয়ে এত সমালোচনা অর্থাৎ ডম্বুর, তা বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে। এছাড়াও ওই বাঁধ কম উচ্চতার অর্থাৎ মাত্র ৩০ মিটার উঁচু।’ অন্যদিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশের পাশাপাশি ত্রিপুরাতেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে বাঁধকে নিয়ে এত সমালোচনা করছে, সেই বাঁধের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপন্ন হওয়া বিদ্যুতের ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায় বাংলাদেশ।