Sandip Ghosh: বাস্তু বিশ্বাসী সন্দীপ। বাড়ি জুড়ে রয়েছে শুধুই শুভ অশুভর হিসেব। ভাগ্যকে সহায় রাখতে অনেকেই অনেক কিছু করে থাকেন। কেউ কঠোর পরিশ্রম করেন, কেউ আবার সারাদিন পূজার্চনার মধ্যে থাকেন। কেউ কেউ আবার বাস্ত বিষয়টিকেও বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখেন। আর.জি.কর কাণ্ডে অভিযুক্ত প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ (Sandip Ghosh) তেমনই একজন। তার বেলেঘাটার বহুতল বাড়ি দেখলেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এই বাড়িটির নাম বালাজি নিবাস। গোটা বাড়ি জুড়ে কোথাও বজরংবলীর পতাকা, তো কোথাও তুলসী গাছ। আবার কোথাও মানিপ্ল্যান্ট। কিন্তু কোন কিছুই যত্রতত্র রাখা নেই। সবকিছু নিয়ম মেনে বাস্তু মেনে বসানো।
বাড়ির প্রবেশদ্বার থেকে শুরু হয়েছে বাস্তু মেনে পথ চল সন্দীপ ঘোষের (Sandip Ghosh) বাড়ির মুখ পূর্ব দিকে। বাড়ির পাঁচিল এবং প্রবেশদ্বার দুটির দুপাশে রয়েছে স্বস্তিক চিহ্ন। বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে পুব মুখী বাড়ি এবং প্রবেশদ্বারে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা অত্যন্ত শুভ। অশুভ শক্তিকে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এই স্বস্তিক চিহ্ন। বাড়ির দরজার উপরে রয়েছে একটি পঞ্চমুখী হনুমানের ছবি। বাস্ত মতে, এই ছবিটিও গৃহে সুখ শান্তি বজায় রাখতে এবং অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।
এরপর প্রত্যেক তলায় পূর্বদিকে রয়েছে নানা রকম শুভ চিহ্ন। যেমন দ্বিতীয় তলায় পূর্ব দিকের বারান্দায় রয়েছে শনি ঠাকুরের একটি মূর্তি। তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় রয়েছে সূর্য দেবতার কপারের তৈরি মুখ। বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে বাড়ির পূর্বদিকে সূর্য দেবতার মুখ বসালে তা সৌভাগ্য বয়ে নিয়ে আসে। অশুভ শক্তিকে দূরে সরিয়ে শুভশক্তির সমাগম ঘটাতে সাহায্য করে এই মূর্তিগুলো। এমনকি বাড়ির ছাদেও পূর্ব দিকে লাগানো রয়েছে একটি হনুমানজির ছবি এবং দেওয়ালে আঁকা রয়েছে একটি স্বস্তিক চিহ্ন। বাড়ির নিচ তলা থেকে ছাদ অবধি বাদ যায়নি কোন অংশ। চারিদিকে রয়েছে এমনই শুভ অশুভর নানা সংকেত।
আরো পড়ুন: কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! শুধু সন্দীপ নন, নজরে আরও ৫ স্বাস্থ্যকর্তা! আরজি করে হয়েছে বিপুল টাকা নয়ছয়
সন্দীপ ঘোষের (Sandip Ghosh) বাড়িতে শুধুমাত্র পূর্ব দিক নয় উত্তর, দক্ষিণ সব দিকেই বিচার বিশ্লেষণ করে বসানো হয়েছে এক একটি শুভ চিহ্ন। যেমন বাড়ির দক্ষিণ দিকে বজরংবলীর পতাকা রাখা অত্যন্ত শুভ। শুভ সংকেত বয়ে নিয়ে আসে এই পতাকা। তাই ছাদের দক্ষিণ দিকে বসানো রয়েছে একটি বজরংবলীর পতাকা। পুব মুখী এই বাড়িটির ঈশান কোণে অর্থাৎ উত্তর-পূর্বকোণে দোতলায় বসানো রয়েছে তুলসী গাছ। বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে ঠিক এই অবস্থানে তুলসী গাছ বসানো গৃহের জন্য অত্যন্ত শুভ। অগ্নিকোণ অর্থাৎ দক্ষিণ-পূর্ব কোণে বসানো রয়েছে মানিপ্ল্যান্ট। আর্থিক উন্নতির কথাও তো ভাবতে হবে। মানিপ্ল্যান্ট সংসারে অর্থ নিয়ে আসে। এমনকি বাদ পড়েনি পয়: প্রণালির ব্যবস্থাও। বাস্তু মেনে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বানানো হয়েছে পুরো বাড়ির পয়: প্রণালী ব্যবস্থাগুলি। সন্দীপ ঘোষের বাড়ির আনাচে-কানাচে যেভাবে বাস্তু মেনে তৈরি করা হয়েছে তা দেখে পরিষ্কার বোঝা যায় যে কোন বাস্তু বিশেষজ্ঞের দ্বারা বিবেচনা করেই গাধা হয়েছে এই বাড়িটির প্রত্যেকটি ইট।
শুধু জিনিসপত্র, ঠাকুরের মূর্তি এসবই নয়, বাড়ির রংটাও করা হয়েছে বাস্তু মেনেই। কিন্তু এত কিছু করেও কি শেষ রক্ষা হবে? বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে সন্দীপ ঘোষ (Sandip Ghosh) হয়তো বাস্তু মতে বিশ্বাসী। হয়তো এতদিন উপকারও পেয়েছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে বোধহয় তার যোগ খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। তার বাড়ির ধরন এবং অবস্থান দেখে মনে হয় তিনি অত্যন্ত জেদি এবং রাগই স্বভাবের একজন মানুষ। কিন্তু শুধুমাত্র বাস্তু মেনে চললেই যে সৌভাগ্য আসে না তা কিন্তু প্রমাণিত। যদি আপনি মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করেন আর বাস্তু মেনে চলেন তাহলে আপনার জীবনে অনেক উন্নতি হবে। কিন্তু যদি আপনি অন্যের ক্ষতির উদ্দেশ্যে এগোন তাহলে তার ফল ভুগতে হবে আপনাকেও। যদি কেউ ভেবে থাকেন, বাস্তু মেনে চলাফেরা করলেই যে কোন অন্যায় করে পার পেয়ে যাওয়া যাবে তা কিন্তু একেবারেই ভুল ধারণা। সন্দীপ ঘোষের সময়টা এমনিতেই ভালো যাচ্ছে না। এরপর তার জীবনে কি কি ঘটতে চলেছে তা জানা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।