Satish Kumar: ভারতীয় রেলের ইতিহাসে প্রথম দলিত চেয়ারম্যান হলেন সতীশ কুমার, নতুন দিগন্তের উন্মোচন

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Satish Kumar: ভারতীয় রেলের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী মুহূর্তের সূচনা হলো! রেল বোর্ডের শীর্ষ পদে এই প্রথমবারের মতো একজন দলিত ব্যক্তি হিসেবে আসীন হতে চলেছেন সতীশ কুমার। ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসের (আইআরএমএস) একজন অভিজ্ঞ অফিসার হিসেবে পরিচিত, সতীশ কুমার (Satish Kumar) খুব শিগগিরই ভারতীয় রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। বর্তমান চেয়ারপার্সন ও সিইও জয়া ভার্মা সিনহা ৩১ আগস্ট অবসর গ্রহণের পর, ১ সেপ্টেম্বর থেকে রেল বোর্ডের শীর্ষ পদে বসবেন সতীশ কুমার। এই পদক্ষেপ শুধু রেলওয়ে নয়, পুরো দেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে।

Advertisements

কিন্তু, কে এই সতীশ কুমার (Satish Kumar)? আসুন, চিনে নেওয়া যাক এই অসাধারণ ব্যক্তিত্বকে, যিনি নিজের কর্মদক্ষতা আর নেতৃত্বগুণে রেল বোর্ডের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করতে চলেছেন। সতীশ কুমার ইন্ডিয়ান রেলওয়ে সার্ভিস অফ মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্সের ১৯৮৬ সালের ব্যাচের একজন প্রবীণ অফিসার। ১৯৮৮ সালে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন, এবং তারপর থেকে ভারতীয় রেলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

Advertisements

তাঁর দীর্ঘ ৩৪ বছরের কর্মজীবনে তিনি এমন বহু পদে কাজ করেছেন, যেখানে তাঁর নেতৃত্বগুণ এবং কাজের দক্ষতা তাঁকে স্বতন্ত্রভাবে চিনিয়ে দিয়েছে। নর্দার্ন রেলওয়ের লখনউ ডিভিশনে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) হিসেবে তিনি যে কর্মদক্ষতা দেখিয়েছেন, তা প্রশংসার দাবিদার। এর আগে তিনি নর্থ-ওয়েস্টার্ন রেলওয়ের জয়পুরে চিফ ভিজিল্যান্স অফিসার এবং সিনিয়র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, যা তাঁর অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

Advertisements

কর্মজীবনে সতীশ কুমারকে (Satish Kumar) সবসময়ই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে, কিন্তু তাঁর দক্ষতা এবং একাগ্রতার জন্য তিনি সব বাধা অতিক্রম করে সফল হয়েছেন। বিশেষ করে ঝাঁসি এবং বারাণসীতে লোকোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেইনটেন্যান্সে তাঁর অসাধারণ অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এখানে তিনি নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্নয়নের মাধ্যমে রেলওয়ের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন। বারাণসীতে তাঁর এই সাফল্য তাঁকে রেল বোর্ডের উচ্চপদে উন্নীত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

এছাড়া, তিনি গোরখপুরেও গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে গোরখপুরের রেলওয়ে বিভাগেও অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। সেখানে তাঁর কর্মদক্ষতা এবং সততা তাঁকে একজন আদর্শ নেতায় পরিণত করেছে। এমটিআরএস হিসাবে তাঁর বর্তমান পদটি রেলের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি রেলের ফাংশনের একটি ‘কি পজিশন’ হিসেবে বিবেচিত।

আরো পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে বদলানো হলো আটটি স্টেশনের নাম, যোগীরাজ্যে উন্নতি হচ্ছে নাকি রাজনীতি

সতীশ কুমারের এই অভূতপূর্ব যাত্রা শুধু তাঁর ব্যক্তিগত সাফল্যের কাহিনি নয়, এটি আমাদের সমাজে পরিবর্তনের এক নতুন সূচনা। একজন দলিত ব্যক্তির রেল বোর্ডের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হওয়া প্রমাণ করে যে, কঠোর পরিশ্রম এবং দক্ষতার মাধ্যমে সমস্ত বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। তাঁর এই উত্থান শুধু রেলওয়ের জন্য নয়, ভারতের প্রতিটি প্রান্তের মানুষের জন্য একটি প্রেরণা।

এই মুহূর্তে ভারতীয় রেল একটি নতুন যুগের সূচনা করতে চলেছে সতীশ কুমারের হাত ধরে। তাঁর নেতৃত্বে রেল বোর্ড আরও উন্নত ও আধুনিকতার পথে এগিয়ে যাবে, এমনটাই আশা করছেন অনেকেই। সতীশ কুমারের এই নতুন পদক্ষেপ ভারতীয় রেলের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা ভবিষ্যতে রেল ব্যবস্থার আরও অগ্রগতির পথ প্রদর্শন করবে।

Advertisements