বাঁকুড়া: রাজ্যে শেষ বিধানসভা নির্বাচন অর্থাৎ ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন যিনি তিনি হলেন চন্দনা বাউড়ি (Chandana Bauri)। যে চন্দনা বাউড়িকে বিজেপি বাঁকুড়ার শালতোড়া থেকে প্রার্থী করেছিল এবং ঝুপড়ি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই জয়লাভ করে বিধায়ক হয়েছেন। বিধায়ক হওয়ার পর এত টাকা নিয়ে তিনি কি করবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে রীতিমত কি জানাবেন তা বলতে গিয়ে ঢোঁক গিলতে হয়েছিল চন্দনা বাউড়িকে।
ঝুপড়ি বাড়িতে বসবাস করা এমন বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি সম্প্রতি একটি পাকা দোতলা বাড়ি করেছেন। তবে বাড়ি তৈরি করলেও এখনো সেই বাড়িতে রং করা হয়নি। কিন্তু মাত্র তিন বছরের মধ্যে ঝুপড়ি থেকে দোতলা বাড়ি তৈরি করায় রীতিমতো বিভিন্ন মহলে ফিসফাস চলার পাশাপাশি অনেকেই জ্বলে পুড়ছেন। তবে চন্দনা বাউড়ি কিন্তু এই বাড়ি খুব কষ্ট করেই তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন।
চন্দনা বাউড়ির কঠিন পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা ভোটের আগে এবং ভোটের পরেও দেখেছি। এছাড়াও ভোটের পরেও তাকে বিভিন্ন সময় দিনমজুরের মত রাস্তা সারাইয়ের কাজ করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু যখনই তিনি দোতলা বাড়ি তৈরি করেছেন তখনই শুরু হয়েছে ফিসফাস। তার আগের কষ্টের কথা অনেকেই ভুলে গিয়েছেন। কিভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিজের বাড়িতে জায়গা দিতে না পেরে অন্যের বাড়িতে ভাড়া দিয়ে রাখতেন তাও অনেকেই ভুলে গিয়েছেন। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই তার একটি বাড়ি দরকার ছিলই।
আরও পড়ুন : Farmers: কৃষকদের জন্য ১৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কেন্দ্রের, বদলে যাবে অন্নদাতাদের হাল
২০২০ সালে চন্দনা বাউড়ি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি পেয়েছিলেন। এরপর ২০২১ সালে তিনি বিধায়ক হন। বিধায়ক হওয়ার পর তার বাড়িতে যে সকল গরু, ছাগল, বাছুর ছিল সেসব তিনি আর দেখাশোনা করার সুযোগ পেতেন না। সেসব তিনি এখন বিক্রি করে দিয়েছেন এবং সেই টাকা দিয়ে আবাস যোজনা প্রকল্পের যে বাড়ি পেয়েছিলেন তার ছাদ ঢালাই করান। পরে ধীরে ধীরে বিধায়ক হিসাবে পাওয়া টাকা থেকে বাকি অংশ করেছেন।
এমন কষ্ট করে বাড়ি তৈরি করার দাবি করার পাশাপাশি চন্দনা বাউড়ি স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, তার স্বামী এবং ভাই দুজনেই রাজমিস্ত্রি। তারা দুজনেই বাড়ি তৈরি করার কাজ চালানোর পাশাপাশি তিনি নিজেও লেবারের মতো হাত লাগিয়ে বাড়ি তৈরি করেছেন। আর এসবের ফলে খরচ অনেকটাই কমে গিয়েছে। সুতরাং চন্দনা বাউড়ির এখন দোতলা বাড়ি দেখে যারা হিংসায় জ্বলছেন তাদের মনে রাখতে হবে, কষ্টের টাকা ও পরিশ্রম করেই চন্দনা বাউড়ি আজ দোতলা বাড়ির মালিক।