নিজস্ব প্রতিবেদন : আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ওয়েবসাইট অথবা পোর্টালে কিছু পুরাতন ভারতীয় নোটের ছবি দেখে থাকি। সেই সকল ওয়েবসাইট অথবা পোর্টালে বলা হয়ে থাকে, ‘এই ধরনের নোট আপনার কাছে থাকলে পেতে পারেন লাখপতি।’
এমনই একটি ওয়েবসাইট এবং পোর্টাল দেখে বীরভূমের সিউড়ি থানার অন্তর্গত সিউড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিকগুনা পাড়ার সৃজনী বিশ্বাস নামে এক উচ্চশিক্ষিত কলেজছাত্রী খোয়ালেন হাফ লক্ষ টাকার বেশি। সুতরাং আপনি যদি এমন পুরাতন নোট কেনাবেচার ক্ষেত্রে যুক্ত থাকেন অথবা এমন কোনো পরিকল্পনা রয়েছে তাহলে ওই তরুণীর সাথে কি ঘটেছিলো তা জানার পরই পা বাড়ান।
গত রবিবার রাতে ওই তরুণী একটি ওয়েবসাইটে তার কাছে থাকা পুরাতন একটি দু’টাকার নোটের ছবি তুলে আপলোড করেন এবং সেই নোটের মূল্য হিসেবে তিনি এক লক্ষ টাকা রাখেন। ওই ওয়েবসাইটে নোটের ছবি আপলোড করার সময় ওই তরুণী তার ইমেল সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য। ঠিক কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় আসল খেলা।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই তার ইমেলে একটি মেল আসে, যেখানে এক ব্যক্তি ওই নোটটি ক্রয় করার কথা জানান এবং ওই তরুণীর দাবি অনুযায়ী এক লক্ষ টাকা দিতে রাজি হন। সেই সাথে সাথে ওই ব্যক্তি তরুণীকে একটি মোবাইল নম্বর দেন এবং সেখানে নোটটির বর্তমান ছবি তুলে পাঠাতে বলেন।
ওই ব্যক্তির দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে নোটের ছবি তুলে পাঠানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার নামে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকার একটি রশিদ তাকে পাঠানো হয়। বলা হয় বাড়তি যে ৫০০০ টাকা রয়েছে সেই টাকা আপনাকে পাঠাতে হবে ১ লক্ষ টাকা পাওয়ার জন্য। কারণ হিসাবে ওই ব্যক্তি জানান তিনি যেহেতু আমেরিকা থেকে এই টাকা পাঠাচ্ছেন তাই মার্কিন ডলার ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তরিত হতে ওই চার্জ করা হচ্ছে।
ওই তরুণী কোনকিছু আগে পিছে না ভেবে ৫০০০ টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন চার্জের নাম করে কখনো ৮১০০ টাকা, কখনো ১৬০০০ টাকা, কখনো আবার ২২ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার ৩০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় ওই তরুণীর থেকে। ওই তরুণীকে এই সমস্ত টাকা পাঠানোর সময় বলা হয় নোটের মূল্য বাবদ ১ লক্ষ টাকা ছাড়াও তিনি যে সমস্ত টাকা বর্তমানে পাঠাচ্ছেন সব অ্যাকাউন্টে ফেরত আসবে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এখনো পর্যন্ত নোটের মূল্য পাওয়া তো দূরের কথা তার এই হাফ লক্ষ টাকার বেশি পাঠানো টাকাও ফেরত পান নি। আর এই ভাবেই একজন উচ্চশিক্ষিত তরুণীকে ঠকিয়ে প্রতারকরা হাতিয়ে নিল হাফ লক্ষ টাকার বেশি। এই বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বললে তারা সাধারণ মানুষকে সতর্ক হতে বলেন, কখনোই কোন জায়গা থেকে টাকা আসার জন্য তার চার্জ আগে থেকে দিতে হয় না। কোথাও যদি এমন আগে থেকে চার্জ দেওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে তাহলেই জানবেন কিছু একটা গল্প আছে।