শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : সময় যত এগিয়েছে সমাজে ততো বদল এসেছে। রীতিনীতি থেকে শুরু করে সমস্ত ক্ষেত্রে সমাজে নানা প্রাচীন পন্থাকে ভেঙে নতুনের সূচনা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী পুরুষ ভিন্নতা ভেঙে সমঅধিকারের লড়াইয়ে অনেকেই করে চলেছেন। পুরুষতান্ত্রিক কিছু নিয়মাবলী ভেঙে নতুন করে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা।
আমাদের সমাজে বিবাহের ক্ষেত্রে রীতিনীতি নিয়মের যেন ছড়াছড়ি থাকে। আর সেই সব নিয়মের বেশিরভাগই যেন কোথাও না কোথাও নারীকে যথাযথ জায়গা দেওয়া হয়না অধিক গুরুত্ব পেয়ে থাকে পুরুষরাই। সেই প্রথাকে ভেঙে বিয়ের মতো একটা সুন্দর মিষ্টি বন্ধনকে সকল মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় করে রাখতে নতুনভাবে নজির গড়লেন বর্ধমানের এক নবদম্পতি।
বর্ধমানের কন্যা ও উত্তরপ্রদেশ নিবাসী ছেলে দুজনে সমাজে নারী পুরুষের সমান স্থানটা দেখিয়ে দিতে বিয়ের নিয়মের ক্ষেত্রে নিয়ে এলেন বিপুল বদল। ভবিষ্যত প্রজন্মের মাঝে এবং বৃহত্তর সমাজের মাঝে নারী পুরুষ সমান এই বার্তা পৌঁছে দিতেই এমন উদ্যোগ।
বর্ধমান শহরেই কনে শ্রেয়া ঘোষালের সাথে উত্তরপ্রদেশ নিবাসী মানবেন্দ্র সিংহ রাঠোরের বিবাহের আসর বসেছিল বর্ধমান শহরেই। বিয়েতে মহিলা পুরোহিতের মাধ্যমেই সমস্ত বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছিল। এছাড়াও বিয়েতে ছিল আরও চমক। কন্যাদানের কোনো অনুষ্ঠান ছিল না, বরকে প্রদক্ষিণ করে নিয়ম ও রাখা হয়নি এমনকি পান পাতা দিয়ে মুখ ঢাকা নয় বরং খোলা ছিল কনের মুখ। কনেবিদেয় সময় এই বিয়েতে কনেকে বলতেও দেখা যায়নি যে মা বাবার ঋণ শোধ করে চলে যাচ্ছে এমনকি বরকে বউয়ের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলতেও শোনা গেল না। সবকিছুতেই অদ্ভুতরকম বদল এনেছেন এই দম্পতি।
বিয়ের আসর মানেই যেখানে আমরা জেনে আসি সানাই বাজবে কিন্তু ওদের বিয়েতে বেজেছিল পছন্দের সব গান। এমনকি বিয়ের মন্ত্রপাঠেও ছিল নয়া চমক। সেখানে বাংলা বা ইংরেজির ব্যবহার ও দেখা গিয়েছিল।
বর্তমানে সমাজে নারী পুরুষের সমান স্থান প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে বৈদিক নিয়মের দিকে বিয়ে সারতে ঝুঁকেছেন অনেকেই। রোহিণী ধর্মপালের তত্বাবধানে এমন অভিনব বিয়ে সমাজে অন্য সংজ্ঞা এনে দিচ্ছে।
এমন ভাবে বিয়ে করে খুশি ওই দম্পতি। সাথে সাথে তাঁরা আশা করেন সমাজে আরও অনেকেই যেন ভবিষ্যতে তাঁদের চিন্তা দেখে এগিয়ে আসেন।