নিজস্ব প্রতিবেদন : বছর ঘুরতে না ঘুরতেই করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের দুর্ঘটনার স্মৃতি ফিরল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের (Kanchenjunga Express) হাত ধরে। সোমবার ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ঠিক নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন পার করার পর রাঙাপানি ও নিচবাড়ি রেল স্টেশনের মাঝে। এই রেল দুর্ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫ এবং আহতের সংখ্যা ৬০ বলেই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ। আর এই ট্রেনেই ছিল সিউড়ির তিন সদস্যের এক পরিবার।
সিউড়ি থানার অন্তর্গত সিউড়ি হাটজান বাজারের কাননপল্লীর গিরিধারী কর্মকারের পরিবারের সদস্যরা শিলং গিয়েছিলেন। গত ১২ জুন তারা রওনা দিয়েছিলেন এবং ১৬ জুন রাত ১০ঃ৪৫ মিনিটে গুয়াহাটি স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়েন। সিউড়ির হাটজান বাজারের কানন পল্লীর ওই কর্মকার পরিবারের তিন সদস্য নিশা কর্মকার, কবিতা কর্মকার এবং শিবম কর্মকার ট্রেনটিতে ছিলেন।
জানা গিয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটির (Kanchenjunga Express) B2 AC 3A কোচে তারা সফর করছিলেন। যখন দুর্ঘটনা ঘটে সেই সময় নিশা কর্মকার ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার সময় আচমকা প্রচন্ড ঝাঁকুনিতে তার মাথায় আঘাত লাগে। তিনি প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারেননি ঠিক কি হলো। এরপর ভয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখতে পান ট্রেনের কামরায় সব এলোমেলো। বাইরের দিকে চোখ রাখতেই দেখেন ভয়াবহ পরিস্থিতি। দেখতে পান তাদের কামরার ঠিক পিছনের কয়েকটি কামরা একটি মাল গাড়ির উপর চেপে গিয়েছে।
সোমবার সকালের এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার ফলে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই ট্রেনে থাকা যাত্রীদের মধ্যে। যারা এই ট্রেনে সুস্থ রয়েছেন তারাও যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। নিশা কর্মকার জানিয়েছেন, “বরাত জুড়ে এই যাত্রায় রক্ষা পেয়ে গেলাম। কেননা তারা ওই ট্রেনের যে কামরায় সফর করছিলেন ঠিক তার পিছনের তিনটি কামরায় এসে সজোরে ধাক্কা মারে মালগাড়িটি।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, তার মাথায় হালকা চোট লাগলেও তাদের কামরার মধ্যে অন্যান্য যে সকল যাত্রীরা ছিলেন তারা সুরক্ষিত রয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ উদ্ধার কার্য চালানোর পর ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের শেষের তিনটি এবং প্রথম দিকের দুটি কামরা অর্থাৎ মোট পাঁচটি কামরা বাদ দিয়ে তিনটি পুনরায় শিয়ালদার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তারা আজ সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরবেন।