নিজস্ব প্রতিবেদন : “বন্ধু, তুমি জান ক্ষুদ্র যাহা/ ক্ষুদ্র তাহা নয়/
সত্য যেথা কিছু আছে/
বিশ্ব সেথা রয়”। রবি ঠাকুরের বলা প্রতিটা কথায় জীবনের কোন না কোন পথে এসে মহৎ জীবন দর্শন হয়ে আমাদের সামনে দাঁড়ায়। বিশ্বকবির উপরিউক্ত কথাটির বাস্তবতাও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে উপলব্ধ হচ্ছে। আমরা যাকে ক্ষুদ্র ভাবি সেও যে বৃহৎ হয়ে উঠতে পারে সত্যের দ্বারা, কর্মের দ্বারা তা রবি ঠাকুর অনেক আগেই বুঝেছিলেন আর বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এই কথা যে কতখানি সত্য তা আমরা বুঝতে পারছি। তাই যে কাজ যন্ত্রের দ্বারা করাও দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার সেই কাজই অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যে করে সোনার পদক পেয়েছে আফ্রিকান এক ইঁদুর।
বম্ব ডিটেক্টরের সাহায্য নিয়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন খুঁজে বার করতে প্রায় চার দিন সময় লাগে। এই একই কাজ আফ্রিকান ইঁদুরটি করেছে মাত্র ৩০ মিনিটে। আফ্রিকান ইঁদুরের কাজের এই দক্ষতা সে দেশের সেনাকে অবধি বিস্মিত করেছে। এই কাজকে সম্মান জানিয়ে আফ্রিকান ওই ইঁদুরটিকে তাই সোনার পদক দিয়ে সম্মান জানানো হলো।
একজন সেনা যেমন ভাবে নিজেকে বিপদের মুখে ফেলে দেশবাসীর জীবন রক্ষা করে ঠিক তেমনভাবে এই ইদুঁরটিও বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে। তার এই মানবকল্যাণের কাজকে সম্মান জানাতেই তাকে সোনার পদক দেওয়া হলো।
আফ্রিকান এই ইদুঁরটির নাম মাগওয়া। সে একাই ৩৯টি ল্যান্ডমাইন ও ২৮টি বিস্ফোরক উদ্ধার করে দিয়েছে। ২০টি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা অর্থাৎ মোট ১ লক্ষ ৪১ হাজার স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকা পরীক্ষা করে বিস্ফোরক উদ্ধার করে দিয়েছে সে। এই বিস্ফোরকগুলি থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে অসংখ্য মানুষের জীবনহানি হত। এই জীবন সংশয় একাই আটকে দিয়েছে আফ্রিকার এই মাগওয়া।
Drumroll please! ? Say hello to Magawa ? the first rat to be awarded the #PDSAGoldMedal & one of APOPO's @HeroRATs trained to detect landmines ? He's discovered 39 landmines making him their most successful HeroRAT?♂️ Watch his full story here ?: https://t.co/so5CNCWlUw pic.twitter.com/YrVy2NWotW
— PDSA (@PDSA_HQ) September 25, 2020
অতীতে অনেকবারই যুদ্ধ ঘটে গেছে কম্বোডিয়ার মাটিতে। আজও সেই দেশের অনেক অজ্ঞাত
জায়গাতেই মাটির নিচে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখা আছে। জায়গাগুলি কোথায় তার হদিশ না জানার জন্য মাঝে মধ্যেই সেই সকল ল্যান্ডমাইন থেকে বিস্ফোরণ ঘটে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। মাটির অনেকটা নিচে রেখে দেওয়া এই ল্যান্ডমাইন খুঁজে বার করবার কাজে অনেক দেশের সেনারাই আফ্রিকান ইঁদুরকে কাজে লাগিয়ে থাকে। আর কম্বোডিয়ার একটি সংস্থা আফ্রিকান ইঁদুরদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেয় যাতে তারা মাটির নিচে থাকা ল্যান্ডমাইন খোঁজার কাজে সাহায্য করতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে এই কাজ সফল ভাবে করে চলেছে আফ্রিকান ইঁদুর মাগওয়া। তাই কম্বোডিয়ার একটি সংস্থা মাগওয়ার এই কাজকে সোনার পদক দিয়ে সম্মানিত করে।
প্রসঙ্গত, কম্বোডিয়ার মধ্যে ইঁদুর ছাড়াও নানা রকমের ছোট প্রাণীদেরকে ল্যান্ডমাইন খোঁজার কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে এখনও অবধি মাগওয়ার মতো এত পরিমাণে বিস্ফোরক আর অন্য কোন প্রাণী খুঁজে পায়নি।