নিজস্ব প্রতিবেদন : ২০২১ সাল থেকেই রাজ্যের সরকারি প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডার (Lakshmir Bhandar) আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়েছে। আবার লোকসভায় তৃণমূল ভালো ফল করতেই এই প্রকল্প নিয়ে এখন চারদিকে আলোচনা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে আবার চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের বন্যা। কিন্তু জানেন, এই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের কৃপাতেই (Lakshmir Bhandar Miracle) এক যুবক এখন হবু ডাক্তার।
আসলে বীরভূমের এক যুবক ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেছেন। কিন্তু ওই যুবকের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে কোন প্রাইভেট টিউটর নেওয়ার মতো ক্ষমতা ছিল না। প্রাইভেট টিউটর না নিয়েই ওই যুবক ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় ৭০০-র মধ্যে ৬৭৩ নম্বর পেয়েছেন। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তার র্যাঙ্ক ১২ হাজার ৭৫৩। ওই যুবকের নাম মাহফুজ আলম ওরফে রাহুল।
রাহুলের বাড়ি কয়থার চৌধুরী পাড়ায়। বাবা মজিবর রহমনের একটি চায়ের দোকান রয়েছে বীরভূমের নলহাটি ব্লকের কয়থা হাসপাতাল মোড়ে। রাহুল ওই দোকানে বাবার সঙ্গে দোকানও চালায় দিনের বেলায়। দিনের বেলায় দোকান চালানোর পাশাপাশি অবসর সময়ে পড়াশোনা করেন এবং রাত জেগে পড়াশোনা করে থাকেন। রাহুল হাইস্কুলের ছাত্র। আর এই কঠোর পরিশ্রম করেই সে আজ ডাক্তারের প্রবেশিকা পরীক্ষায় কোনরকম টিউশন না নিয়েই এত ভালো ফলাফল করতে সক্ষম হয়েছেন।
আরও পড়ুন ? West Bengal Money Allowance: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার অতীত, এবার গণেশ ভাণ্ডার! জোর সাওয়াল ঘিরে শুরু জল্পনা
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, রাহুলের ডাক্তারের প্রবেশিকা পরীক্ষায় এমন ভালো ফলাফলের সঙ্গে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সম্পর্ক কোথায়? সম্পর্ক রয়েছে মোবাইল রিচার্জের টাকায়। আসলে রাহুল এবং তার পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে মোবাইল রিচার্জের টাকা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা থেকেই আসতো। মাসে মাসে তার মা যে টাকা পেতেন সেই টাকা থেকেই রাহুলের মোবাইল নম্বর রিচার্জ করা হতো। আর ওই মোবাইলেই ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে রাহুল অনলাইনে পড়াশোনা করে আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে বলে দাবি করেছেন রাহুল।
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের রাহুল দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াশুনোর সময় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তরুণের প্রজন্ম প্রকল্পের আওতায় স্মার্টফোন কেনার জন্য টাকা পেয়েছিলেন। এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন সরকারি স্কলারশিপ দিয়ে তার পড়াশুনো চালান। এর পাশাপাশি তার বাবার বিভিন্ন জায়গায় ঋণ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। যে কারণেই ঋণের টাকা শোধ করতে করতে বাবার অবস্থা নাজেহাল হয়ে দাঁড়ায়। সেইভাবে বাবা আর্থিকভাবে সাহায্য করতে না পারার কারণেই লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকায় মোবাইল রিচার্জ এবং একটি অনলাইন সংস্থায় পড়াশোনা করে আগামী দিনে ডাক্তার হতে চলেছেন রাহুল।