চাপে পরে ৫৭ জনের কথা বলছে, ভাগ্যিস কেন্দ্রীয় দল এসেছিল, অধীর চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদন : পশ্চিমবঙ্গে করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত রোগী ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে শুরু থেকেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলতে থাকে বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতারা। তাদের বারংবার অভিযোগ, সরকার তথ্য গোপন করছে। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিআইএম প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের একই অভিযোগ।

এছাড়াও প্রথম থেকেই কেন্দ্র সরকারের দেওয়া হিসাবের সাথে রাজ্য সরকারের দেওয়া হিসাবের গরমিল লক্ষ্য করা গিয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রের তরফ থেকে বারবার রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় ঠিকঠাক লকডাউন মানা হচ্ছে না বলে দাবি করা হয়, একের পর এক চিঠি দেওয়া হয় রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। এরপরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গে আন্তঃমন্ত্রক দল পাঠায়। আর এই দলের পর্যবেক্ষণের মাঝেই গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার জানা যায়, রাজ্য সরকারের গঠন করা কমিটি ৫৭ টি কেস অডিট করেছে, যার মধ্যে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায় ও বাকি ৩৯ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ থাকলেও মৃত্যু হয়েছে অন্য কারণে। আর এরপরেই লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, ভাগ্যিস কেন্দ্রীয় দল এসেছিল।

কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী শনিবার রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানান পদক্ষেপকে কটাক্ষ করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের সাথে লুকোচুরি খেলা খেলছিল। করোনা সংক্রান্ত নানান তথ্য ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এটা কার স্বার্থে? তথ্য গোপন করার কারণ কি?

অধীর রঞ্জন চৌধুরী এদিন বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহলের মানুষের মধ্যে নানান প্রশ্ন উঠছে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে এই নিয়ে প্রশ্ন করেছি, চিঠি করেছি। করোনার মৃত্যু নিয়ে বাংলার মানুষের সাথে যাতে লুকোচুরি খেলা না হয় তার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করেছি, প্রতিবাদ করেছি। আজ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার স্বীকার করছে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।”

এরপরেই তিনি বলেন, “কেন্দ্র থেকে টাস্ক ফোর্স গেল, তাদেরকে আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে, তারা তথ্য জানতে চাইছে, বাংলার সরকার তথ্য দিতে চাইছে না। চাপে পড়ে আজ ৫৭ জনের কথা স্বীকার করেছে। আসলে কি মৃতের সংখ্যা এর থেকেও বেশি? প্রশ্ন উঠবে। কারণ গতকাল পর্যন্ত বাংলার মানুষ জানত না ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাতে। আজ চাপে পড়ে আপনারা বলছেন ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মাননীয় রাজ্যপাল মহাশয় এই জায়গায় সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। এই জায়গায় রাজ্যপালের সাথে আমার একমত।”

করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাধ করেছেন বলে দাবি করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তার অভিযোগ, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আপনি করোনার মৃত্যু সম্পর্কে তথ্য গোপন করে, ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে, লুকোচুরি করে বাংলার মানুষের সাথে আপনি অন্যায় করেছেন এবং সেই সঙ্গে আপনি একটা ক্রিমিনাল অফেন্স করেছেন। আপনি একটা অপরাধ করেছেন। অপরাধ একদম অপরাধ করেছেন আপনি। আপনি এটা পারেন না করতে। ধামাচাপা দিয়ে আপনার কিসের লাভ? মৃতের সংখ্যা লুকিয়ে আপনার কিসের লাভ? মৃতের সঠিক সংখ্যা জেনে মানুষ সতর্ক হয়ে যাক।”