বিক্ষোভের জের, তদন্তের পর পুনরায় তালা খুললো অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের

নিজস্ব সংবাদদাতা : দুই দিন তালাবন্ধ থাকার পর অবশেষে আজ সকালে খোলা হল সদাইপুর থানার চিনপাই গ্রামের ওই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার।

উল্লেখ্য, সদাইপুরের উক্ত ডোমপাড়ার অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার তথা ‘সুসংহত শিশু বিকাশ সেন্টার’টিতে গত শুক্রবার রান্না করা খাবারের মধ্য পোকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। জানা যায়, বিষয়টি ওই সেন্টারের কর্মী দিপালী মজুমদারকে জানানো হলে তিনি অভিভাবকদের সাথে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন। দিপালী মজুমদার ওই পাড়ারই বাসিন্দা বলে তাকে সাবধান করে ব্যাপারটি তখনই মিটিয়ে নেওয়া হয়। এরপর পরের দিনও একই ঘটনা ঘটলে এলাকার মানুষ তখন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ওই সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেন।

উত্তেজনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিলন বাগ্দী এবং চিনপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তুলুসী দাস , শেখ ফটিক প্রমূখ। এসে তাঁরা দেখতে পান মজুত প্রায় সকল খাদ্য সামগ্রীই সময়সীমা পার হয়ে যাওয়া , পোকা ধরা এবং সামগ্রী থেকে গন্ধ বের হচ্ছে। সেন্টারের পরিবেশও অত্যন্ত নোংরা। বিষয়টি তখনই ফোনে জানানো হয় সিডিপিও প্রবীর বিশ্বাসকে। উনি সোমবার এসে তদন্তের আশ্বাস দেন। সেইমতো গ্রামবাসীরা ওইসব খাদ্য সামগ্রী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিলন বাগ্দী এবং ফটিক বাবুদের সামনে পাশের একটি ক্লাব ঘরে মজুত করে রাখেন। ওইসকল সামগ্রী দিয়ে যাতে আর রান্না না হয় তারজন্য ক্লাবঘরেও তালা মেরে দেওয়া হয়।

সেইমতো গতকালও রান্না হয়নি। অবশেষে কাল দুপুর দুটো নাগাদ সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক প্রবীর বিশ্বাস এসে পৌঁছালে এলাকার মানুষ উনার সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রবীরবাবু অভিযুক্ত কর্মী দিপালী মজুমদারকে কারণ দর্শাতে চাইলে অভিযুক কর্মী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়াও সঠিক কাগজ, উপস্থিতির হার কিম্বা চালান দেখাতে পারেননি। অভিযুক্ত দিপালী মজুমদারের খারাপ ব্যবহার নিয়েও গ্রামের মানুষ সোচ্চার হন ও তাকে এখান থেকে সরিয়ে দেবার দাবী জানান। এরপর গ্রামের মানুষের দাবী মতো সিডিপিও প্রবীর বিশ্বাস অভিযুক্ত কর্মী দিপালী মজুমদারকে এই সেন্টার থেকে শীঘ্রই সরিয়ে দেবার আশ্বাস দেন এবং ওইসকল সময়সীমা পার হয়ে যাওয়া চাল, ডাল, সরষের তেল, লবণ সহ সকল সামগ্রী পাল্টে দেবার ব্যবস্থা করেন। পঞ্চায়েত সদস্য শেখ ফটিক ও তুলুসী দাস মহাশয়ও আধিকারিককে হাতের কাছের পেয়ে এলাকার প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের পরিষেবা উন্নতমানের দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের কর্মীদের বসবার জন্য দাবী রাখেন। এছাড়াও ভবিষ্যতে যাতে আর এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তারজন্য এলাকার মানুষদের নিয়ে পাঁচ জনের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।

এরপর আজ সকালেই পাড়ার মহিলা এবং ক্লাবের সদস্য গোপী বাউরি, লব বাউরিদের উপস্থিতিতে সেন্টারের তালা খুলে দেওয়া হয় এবং সেন্টারের কাজকর্ম স্বাভাবিক ভাবেই শুরু হয়।