নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চার বছরের চুক্তিতে সেনা নিয়োগ করার পরিপ্রেক্ষিতে যে প্রকল্প আনা হয়েছে তার নাম দেওয়া হয়েছে অগ্নিপথ। এই প্রকল্পের আওতায় যারা সেনাবাহিনীতে যুক্ত হবেন তারা হবেন অগ্নিবীর। তবে এই প্রকল্প নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে সেনায় চাকরি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে। অস্থায়ী পদের নিয়োগ নিয়ে অশান্তির মূল কারণ। যে কারণে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছে বিক্ষোভ।
১) এই পদ্ধতিতে সেনাতে নিয়োগ করা হলে বেতন এবং পেনশন বাবদ কেন্দ্রের অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রক সেই টাকা দিয়ে প্রযুক্তির উন্নতির চিন্তাভাবনা করছে। আর আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সাজিয়ে তোলা হবে ভারতীয় সেনাকে।
২) এই প্রকল্পের মাধ্যমে যুবসমাজকে ভারতীয় সেনায় কাজের সুযোগ এবং প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ দিতে চাইছে।
৩) বর্তমানে ভারতীয় সেনায় যারা নিযুক্ত রয়েছেন তাদের গড় সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর। সেই জায়গায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ১০ বছরের মধ্যে এই গড় বয়স নেমে আসবে ২৬ বছরে। কেন্দ্রের দাবি, এর ফলে বাহিনী হবে আরও তরতাজা এবং শারীরিক সামর্থ্যে ভরপুর।
৪) নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতই শারীরিক সক্ষমতার শর্ত এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল্য রাখা হচ্ছে। এই প্রকল্পে আগ্রহী যুবক-যুবতীরা অগ্নিবীর হিসাবে কাজ করতে পারবেন।
৫) নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স সীমা ১৭.৫ বছর থেকে ২৩ বছর পর্যন্ত করা হচ্ছে।
৬) বার্ষিক বেতন ৪.৭৬ লক্ষ টাকা থেকে ৬.৯২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আয়ের ৩০ শতাংশ ‘সেবা নিধি’তে জমানো যাবে। সমপরিমাণ টাকা দেবে সরকারও।
৭) বেতন ছাড়াও অগ্নিবীররা পাবেন যাতায়াতের খরচ, রেশন এবং উর্দি।
৮) চার বছরের এই মেয়াদ শেষে ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে স্থায়ী সেনায় যুক্ত করা হবে।
৯) বাকিদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য এককালীন ১১.৭ লক্ষ টাকা ভাতা দেওয়া হবে। তবে অবসরকালীন অন্য কোন সুবিধা আর দেওয়া হবে না।
১০) স্থায়ী কমিশন হিসাবে নিযুক্ত না হওয়া ৭৫% অগ্নিবীর আধা সামরিক বাহিনী সহ সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। এমনকি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে তাদের পুনরায় ডেকে পাঠানো হতে পারে।
১১) অগ্নিবীর শংসাপত্র পাওয়ার পর কেউ ব্যবসা বা অন্য কোন কিছু করতে চাইলে স্বল্পসুদে ঋণ পাবেন।
১২) অগ্নিপথ প্রকল্পে কাজ করার সময় যদি কারোর মৃত্যু হয় তাহলে বিমা বাবদ ৪৮ লক্ষ টাকা এবং অতিরিক্ত ৪৪ লক্ষ টাকা অনুদান পাবে পরিবার। সেই সঙ্গে মিলবে চাকরি জীবনের বাকি মেয়াদের বেতনও।
১৩) কাজ করার সময় কোন অগ্নিবীরের অঙ্গহানি হলে ১৫ থেকে ৪৪ লক্ষ টাকা অনুদান এবং সেই সঙ্গে মিলবে চাকরি জীবনের বাকি মেয়াদের বেতন।
বিক্ষোভ কেন?
১) এই প্রকল্প চালু হওয়ার ফলে সেনার নিম্নপদে স্থায়ী নিয়োগ আপাতত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
২) অগ্নিবীর হিসাবে নিযুক্ত হলেও চার বছর পর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন সেনায় চাকরিপ্রার্থীরা।
৩) স্থায়ী কমিশন না পেলে অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা না পাওয়াটা বিক্ষোভের অন্যতম কারণ।
৪) বয়সের উর্ধ্বসীমা নিয়ে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। যদিও সরকার তা ২১ বছর থেকে বাড়িয়ে ২৩ বছর করেছে।