নিজস্ব প্রতিবেদন : বিহার নির্বাচনে চমক দিয়েছে হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়াইসির দল অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM), তা অনস্বীকার্য। এই নির্বাচনে এই দলটিকে অ-বিজেপি দলগুলি ‘ভোট কাটুয়া’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু ফলাফল বের হতেই দেখা গেল মাত্র ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তারা জয় ছিনিয়ে নিয়েছে ৫টি আসন। আরও উল্লেখ্য এই পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসনে পশ্চিমবঙ্গের মালদা এবং উত্তর দিনাজপুর লাগোয়া। আর এই বড় সাফল্যের পরেই আসাউদ্দিন ওয়াইসির ঘোষণা ‘বাংলায় আসছি’।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বের হবার পরেই আসাউদ্দিন ওয়াইসির এই দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা নাকি অ-বিজেপি ভোটে ভাঙ্গন ধরিয়েছে। এমনকি বহু রাজনৈতিক নেতারাই মিমকে বিজেপির ‘বি টিম’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। অভিযোগ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট কেটে নিন সুযোগ করে দিয়েছে বিজেপিকে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কম করে ১২-১৪টি আসনে এমনটাই হয়েছে। বিজেপি বিরোধী দলগুলির দাবি, মিম এমনটা না করলে ফলাফল আলাদা হতো। তবে এই সকল দাবি বাস্তবতা কতটা?
বিজেপি বিরোধী দলগুলি বিশেষ করে কংগ্রেসের এই সকল অভিযোগের জবাব দিতেই আসাউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “আপনারা যা বলতে চাইছেন তাতে আমাদের ভোটে লড়া উচিত নয়! মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস গিয়ে শিবসেনার কোলে বসে পড়লো। আপনাদের কেউ কি জিজ্ঞাসা করেছে আপনারা কেন ভোটে লড়েন। আমার দল পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরপ্রদেশ দেশের সমস্ত বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবে। নির্বাচনী লড়াই করার জন্য কারোর অনুমতি নিতে হবে নাকি?”
এর পাশাপাশি এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আসাউদ্দিন ওয়াইসি কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “অধীর চৌধুরীকে জবাব দিতে হবে ওনার লোকসভা কেন্দ্রে মুসলিমদের অবস্থা এত খারাপ কেন? মিম পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় লড়াই করবে। বাংলায় আসছে মিম।”
পর্যবেক্ষকদের মতে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে আসাউদ্দিনের দল মিম প্রতিদ্বন্দিতায় নামলে আশঙ্কা তৈরি হবে তৃণমূলের। কারণ বাংলার সংখ্যালঘু ভোটের ষোল আনাই যায় তৃণমূলের ঝুলিতে। এরপর আবার রয়েছে বাম-কংগ্রেস জোটের সম্ভাবনা। এমনটা হলেও সংখ্যালঘু ভোটের বেশ কিছু অংশ চলে যাবে তাদের ঝুলিতে। তবে বাম কংগ্রেস জোট তেমনটা না ভাবালেও ইতিমধ্যেই মিম বেশ ভাবতে শুরু করেছে শাসক দলকে। যে কারণে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বের হতেই তৃণমূল নেতাদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে মিমের গন্ধ।
অনুব্রত মণ্ডল তো ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন এই মিম দলকে কেউ যেন বিশ্বাস না করে। তাঁর বক্তব্য, “সবাইকে বলব কেউ যেন মিমকে বিশ্বাস না করে। যে দল বিজেপির দালাল হয়। পয়সার বিনিময়ে মিম যা করেছে তা অন্যায় করেছে। পশ্চিমবাংলায় মিম যদি ক্যান্ডিডেট দেয় তাহলে কিছু সুবিধা করতে পারবে না। কারণ পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম এবং হিন্দু সকলে সচেতন।”