নিজস্ব প্রতিবেদন : স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) হয়েছে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। সেই মামলায় প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে শুনানি চলছিল। শুনানি চলাকালীন বিচারপতিদের তরফ থেকে বারবার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছিল, পুরো নিয়োগ প্যানেল বাতিল করা হতে পারে। অবশেষে সেই রকমই রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে এই মামলার শুনানি চলার পর সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ পুরো প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দেন। এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশের নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের পুরো এসএসসি প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফ থেকে।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের এমন নির্দেশের পর ২৩৭৫৩ জনের নিয়োগ বাতিল করা হলো। শুধু নিয়োগ বাতিল নয়, এর পাশাপাশি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর যারা চাকরি পেয়েছিলেন তাদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদ সহ টাকা ফেরত দিতে হবে। এছাড়াও ছয় সপ্তাহের মধ্যে ডিআই ও জেলাশাসকদের রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সকল নির্দেশ ছাড়াও আদালতের তরফ থেকে এদিন সিবিআইকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে সিবিআই। সিবিআই সেই সকল আধিকারিকদের গ্রেপ্তার করতে পারবে যারা বাড়তি পদ তৈরি করেছিলেন। অন্যদিকে স্কুল সার্ভিস কমিশন নির্বাচন প্রক্রিয়া মিটে যাওয়ার পর নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে বলেও আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক চাকরি বাতিল করার পরিপ্রেক্ষিতে রয়েছে ওএমআর শিট। যা নষ্ট করার আগে স্ক্যান করে রাখা হয়নি। আদালতের তরফ থেকে এই শিট না পাওয়া গেলে আগেই বলা হয়েছিল পুরো প্যানেল বাতিল করে দেওয়া হবে।
২০২১ সালের জুন মাসে এই মামলার শুনানি শুরু করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে এদিন সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হলেও কেবলমাত্র একজনের নিয়োগ বাতিল করা হয়নি। আর তিনি হলেন বীরভূমের সোমা দাসের। যিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরেও চাকরির জন্য আন্দোলন করে গিয়েছিলেন। পরে তাকে আদালত চাকরি দেয়। আর আজ কেবলমাত্র তার চাকরি বাদে সবার চাকরি বাতিল করে দেওয়া হল। ভোটের সময় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পুরো প্যানেল বাতিল করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাকফুটে পড়ে গেল শাসক দল তৃণমূল।