বাদ পড়লেন না জগন্নাথ দেব, শঙ্কায় Yes Bank-এ থাকা ৫৪৫ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ওড়িশার জগন্নাথ মন্দিরের বিপুল পরিমাণ অর্থ ‘Yes Bank’-এ মজুত থাকায় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থের মধ্যে রয়েছে ৫৪৫ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট, আর ৪৭ কোটি টাকা রাখা ছিল ফ্লেক্সি অ্যাকাউন্টে। যদিও ফ্লেক্সি অ্যাকাউন্টের টাকা আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু আশঙ্কা ৫৪৫ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেখানকার প্রত্যেকটি দল।

গত এক বছর ধরে বিপুল পরিমাণে ঋণের বোঝা ও তহবিলে টান ধরায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া কেন্দ্রের সাথে কথা বলে ইয়েস ব্যাঙ্ক নিয়ে পদক্ষেপ নেয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া জানিয়ে দেয়, ৩রা এপ্রিলের মধ্যে ৫০০০০ টাকার বেশি তুলতে পারবেন না ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা। যার ফলে সমস্যায় পড়েন ওই ব্যাঙ্কের প্রায় ২৯ লক্ষ গ্রাহক। এই সকল বেশিরভাগ গ্রাহকদের ওই ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্টের রয়েছে দু লক্ষ টাকার বেশি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশনা অনুসারে ৩ রা এপ্রিল পর্যন্ত ইয়েস ব্যাঙ্ক কোনো রকম ঋণও দিতে পারবে না। ব্যাঙ্কের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে বসানো হয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএফও প্রশান্ত কুমারকে প্রশাসক পদে।

আর ব্যাঙ্কের এই দুর্দশার কারণে শুক্রবার শেয়ারবাজার খুলতেই ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ৮৫ শতাংশ পড়ে যায়। তবে তারই মাঝে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আশ্বাস দেন, ইয়েস ব্যাঙ্কে থাকা গ্রাহকদের টাকা সুরক্ষিত আছে। পাশাপাশি তিনি এও আশ্বস্ত করেন, ইয়েস ব্যাঙ্কের কর্মচারীদের এক বছরের বেতন মজুদ রয়েছে। আর এই আশ্বাসের পর এই কিছুটা হলেও শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়ায়। ইয়েস ব্যাঙ্কের এমন পরিস্থিতিতে ওই ব্যাঙ্কের সাথে যুক্ত থাকা মোবাইল ওয়ালেট, ই-কমার্স ও ফুড ডেলিভারি সংস্থাগুলির উপরও প্রভাব পড়েছে।

তবে জগন্নাথ মন্দিরের এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির অর্থ কেন ইয়েস ব্যাঙ্কে রাখা হয়েছিল তার সম্পর্কে জানা যায়, শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রাক্তন চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মন্দিরের টাকা ইয়েস ব্যাঙ্কে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল, এর ফলে বেশি সুদ পাওয়া যাবে। তবে এই সিদ্ধান্তকে ভুল বলে দাবি করেছেন পুরীর প্রাক্তন বিধায়ক বিজেডি নেতা মহেশ্বর মোহান্তি।

অন্যদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা সুরেশ রাওতারি অভিযোগ করেছেন, কেন তারা মন্দিরের সম্পত্তির অর্থ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে না রেখে বেসরকারি ব্যাঙ্কে রাখলেন। মন্ত্রীর সম্পত্তির অর্থের অপব্যবহার তারা সহ্য করবেন না বলেও জানান। এই অর্থ তাড়াতাড়ি উদ্ধার করতে হবে, আর তা না হলে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন চলবে। মন্দিরের অর্থের এমন সংকট অবস্থায় একই সুর শোনা গেছে বিজেপি নেতা ভৃগু বক্সিপাত্রের মুখেও।