নিজস্ব প্রতিবেদন : দেবী দুর্গার আগমণ আর গমনের পৃথক পৃথক যানবাহনের উল্লেখ আছে শাস্ত্রে। কোন বছর দেবী নৌকায় চেপে আসেন, তো কোন বছর পালকিতে। কোন বছর আবার ঘোড়ায়। পৃথক এই যানবাহনের সঙ্গে ফলাফলেরও উল্লেখ আছে। দেবী কোন যানবাহনে করে কৈলাস থেকে মর্তে আসছেন, আর কোন যানবাহনে করে মর্ত্য থেকে কৈলাসে যাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করে মর্তবাসীদের জীবন কেমন হবে।
ঠিক যেমন গতবছর দেবীর আগমন আর গমন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় হয়েছিল। গতবছর দেবীর আগমন ও গমনের ফলাফল ছিল ছত্রভঙ্গ অর্থাৎ দেবীর আগমন ও গমনের পর পরিস্থিতি এলোমেলো হয়ে উঠবে। তারপর এই বছর দেবীর আগমন হয়েছে দোলা অর্থাৎ পালকিতে। দোলায় আগমনের ফলস্বরুপ পঞ্জিকায় লেখা আছে ‘মড়ক’ অর্থাৎ মহামারী। আর দেবীর গমন হবে গজে। গজে গমনের ফলস্বরুপ পঞ্জিকায় লেখা আছে ‘শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা’।
অর্থাৎ দেবীর আগমনের ফল স্বরূপ মড়ক, মহামারী, দুর্ভিক্ষ ইত্যাদি দেখা দেবে। আর দেবীর গমনের ফল স্বরূপ পৃথিবী শস্য পূর্ণা হয়ে উঠবে।
কোন বছর দেবীর কোন যানে আগমন ও গমন ঘটছে তার একটি বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। আছে একটি বিশেষ ফলাফলও। সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল।
দোলা : দোলা অর্থাৎ পালকি হল মহামারী বা মড়কের প্রতীক।
নৌকা : নৌকা হলো বন্যার প্রতীক। বন্যা একদিকে যেমন খারাপ, অপরদিকে তেমনি ভালো ফসলও বোঝায়।
গজ : গজ অর্থাৎ হাতি। গজ হলো শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতীক।
ঘোটক : ঘোটক বা ঘোড়া হল ছত্রভঙ্গের প্রতীক। ছত্রভঙ্গ অর্থাৎ পরিস্থিতির এলোমেলো হয়ে যাওয়াকে বোঝায় আবার যুদ্ধ, বিপ্লব ইত্যাদিও ঘটতে পারে।
দেবীর যানবাহন সম্পর্কিত প্রসঙ্গে আরও একটি কথা উল্লেখিত আছে। বলা হয় যে কোন বছর দেবীর আগমন ও গমন একই যানে ঘটলে তার পরের বছরটা খারাপ যায়।
প্রসঙ্গত, গত বছর দেবীর আগমন আর গমন একই যানে ঘটেছিল আর তার পরের বছর মানে এই বছর করোনা মহামারী আছড়ে পড়লো। দেবীর যানবাহন সম্পর্কিত প্রসঙ্গে আরও বলা হয় যে দেবীর গজে আগমন বা গমন কে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। দেবীর আগমন আর গমনের ইত্যাদি বিষয় বিশদে আলোচিত আছে দেবীভাগবত পুরাণে, এছাড়া জ্যোতিষশাস্ত্রেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়।