নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারত-চীন সীমান্ত সংক্রান্ত মনোমালিন্য অন্তিম রূপ নেয় গত সোমবার রাতে। এই সংঘাতে ভারতের অন্ততপক্ষে ২০ জন জাওয়ান শহীদ হন। তারপর থেকে লাদাখ সীমান্তে দুই দেশই নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে, একপ্রকার প্রস্তুত হচ্ছে যুদ্ধের জন্য। কিন্তু এই মুহুর্তে সামরিক দিক থেকে যুদ্ধ হলে চীনই ক্ষতির সম্মুখীন হবে। হ্যাঁ, কারণ ভারতের হাতে আছে এমন এক শক্তিশালী ক্ষেপনাস্ত্র যা আর কোনো দেশের কাছে নেই। এই ক্ষেপণাস্ত্র স্থলপথে তো বটেই আকাশপথেও শত্রুর মোকাবিলা করতে সক্ষম।
বিশ্বের প্রতিটি দেশই যখন লেজার অস্ত্র তৈরির পথে হাঁটছিলো, তখন ভারত ঠিক করে লেজারের থেকেও শক্তিশালী কোন অস্ত্র তৈরি করবে। তারপর ১৯৮৫ সালে প্রথম উন্নতমানের এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজ শুরু হয়। উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন এই অস্ত্রটির নাম ‘কালি'(KALI)। পুরো নাম অর্থ হলো ‘কিলো অ্যাম্পিয়ার লিনিয়ার ইঞ্জেক্টর’। ভারতের আকাশে ঢোকার আগেই যেকোনো মিসাইলকে টুকরো টুকরো করে দিতে পারে এই ‘কালি’। যে কোনো শক্তিশালী যুদ্ধবিমানকেও মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দিতে ‘কালি’র জুড়ি মেলা ভার।উল্লেখ্য এই ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথমদিকে দুর্বল ছিলো।পরবর্তীকালে এটির শক্তি বৃদ্ধি করা হয়। আর শক্তি বৃদ্ধির পর এটি ভয়ঙ্কর একটি শক্তিশালী অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে মহাকাশে ভাসমান যে কোন কৃত্রিম উপগ্রহকেই মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দিতে পারে।
সামরিক মহলে কান পাতলে যতটুকু শোনা যাচ্ছে পরমাণু অস্ত্রের চেয়ে কোন অংশে কম নয় এই শক্তিশালী ভয়ঙ্কর অস্ত্র ‘কালি’। আর এই ‘কালি’র কথা শোনার পর থেকেই আতঙ্কে ঘুম উড়ে গেছে চীন ও পাকিস্তানের।
কিভাবে কাজ করবে এই ‘কালি’?
যুদ্ধের পরিস্থিতিতে কোন দেশ যদি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে তখন ‘কালি’ প্রচন্ড গতিতে ছুটে যাবে সেই অস্ত্রের দিকে এবং ওই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে লক্ষ্য করে অসংখ্য ইলেকট্রন কণা ছুঁড়তে থাকবে। তারপর এই ইলেকট্রন কণাগুলি বিকিরণ পদ্ধতিতে মাইক্রোওয়েভ বিকিরণে পরিণত হবে। এই মাইক্রোওয়েভ বিকিরণগুলি ভারতের দিকে ছুটে আসা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দেবে।
লেজারের অস্ত্রের থেকে কোনদিকে উন্নত?
যে কাজ ‘কালি’ করে সেই একই কাজ লেজার অস্ত্রও করে। কিন্তু উভয়ের কাজের মধ্যে পদ্ধতিগত পার্থক্য রয়েছে। লেজার অস্ত্র প্রয়োগ করা হলে লেজার অস্ত্র থেকে নির্গত রশ্মি ক্ষেপণাস্ত্র কতগুলি ছিদ্র তৈরি করে। ওই ছিদ্রগুলি একটা সময় ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়। এই কাজটি করতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় লাগে। অপরদিকে কালি থেকে নির্গত মাইক্রোয়েভ বিকিরণ মুহূর্তের মধ্যেই প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে পারে। অতএব কালি অনেক অল্প সময়েই কার্যসিদ্ধি করতে সক্ষম, লেজার অস্ত্র সেই একই কাজে অনেকখানি সময় নিয়ে ফেলে।
প্রথমদিকে প্রস্তুত করা অস্ত্র ‘কালি’ আর বর্তমান ‘কালি’র পার্থক্য কতখানি?
প্রথমদিকে যখন কালি প্রস্তুত করা হয় তখন এই অস্ত্রটি দুর্বল ছিল। তারপর এই অস্ত্রটির শক্তি বৃদ্ধি করার ফলে এই মুহূর্তে এটি একটি ভয়ঙ্কর অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। প্রথমদিকে ০.৪ গিগাওয়াট শক্তির ইলেকট্রন কণা প্রস্তুত করতে সক্ষম ছিলো কালি। বর্তমানে কালি ৪০ গিগাওয়াট শক্তির ইলেকট্রন কণা প্রস্তুত করতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে বিগত বছরগুলিতে কালির ঠিক কতখানি শক্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রথম দিকে যখন কালি প্রস্তুত করা হয় তখন ভারত সরকার এই ক্ষেপণাস্ত্রটির ক্ষমতা সম্পর্কে কোন কিছুই প্রকাশ করেননি। বলা হয়েছিল শিল্পের প্রয়োজনেই এটিকে প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে এটিকে সামরিক কাজে যুক্ত করা হলে ‘কালি’র শক্তির সাথে সাথে ভারত যে সামরিক শক্তিতে কতখানি এগিয়ে তাও আন্দাজ করা গেলো।